শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

জমিতে কীটনাশকের পরিবর্তে ব্যবহৃত হচ্ছে মেহগনির তেল

আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২১, ২০:১১

কিশোরগঞ্জে কৃষিজমিতে কীটনাশকের পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে মেহগনির তেল। আর তাই উপজেলার বিভিন্ন বাড়িতে নারী-পুরুষ মিলে মেহগনির ফল থেকে তেল তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ ফল থেকে বিচি সংগ্রহ করছেন, আবার কেউ কেউ সেই বিচি গুঁড়ো করছেন। বেশ কিছুক্ষণ ধরে এমন কর্মযজ্ঞ চলার পর তেল প্রস্তুত করে স্প্রে মেশিনে ভরে ধানক্ষেতে ছুটছেন কৃষকরা। পরে ঐ তেল পানির সঙ্গে মিশিয়ে ধানক্ষেতে স্প্রে করছেন কীটনাশকের বিকল্প হিসেবে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায় জানান, এখানকার কৃষকদের তিনি ফসলের পোকা দমনে মেহগনি বীজের তেল ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন। তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হলে জৈব কীটনাশক ছাড়া উপায় নেই। তাই উপজেলার কৃষকদের কীটনাশকের বিকল্প ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পরামর্শ অনুযায়ী তারা কাজও করছেন। ফলে খেতের পোকা দমনে এক দিকে যেমন খরচ কমছে অন্যদিকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে কৃষক। পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্যও উৎপাদন করছে।

উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের কৃষক আবদুল কাইয়ুম জানান, পোকামাকড়ের পাশাপাশি ইঁদুর ধানের ব্যাপক ক্ষতি করে। তাই এবার প্রথম বারের মতো জমিতে মেহগনির তেল ছিটানোর পর জমিতে ইঁদুর আক্রমণ করতে পারেনি। জমিতে কীটনাশক ছিটানোর সময় অনেক সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। ছিটানোর সময় নাক-মুখ ঢাকতে হয়। এতে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। মেহগনির তেল ব্যবহারে এসব সমস্যা হয় না। উত্তর দুরাকুটি গ্রামের কৃষক ময়নুল ইসলাম বলেন, বোরো ধানের জমিতে কমপক্ষে তিন বার কীটনাশক স্প্রে করতে হয়। এতে বিঘাপ্রতি এক থেকে দেড় হাজার টাকা খরচ হয়। মেহগনির তেল ব্যবহারের ফলে খরচ কমে গেছে, ধানক্ষেতও ভালো হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, আস্তে আস্তে ফসলে কীভাবে কীটনাশকের বিকল্প ওষুধ ব্যবহার করা যায় সেজন্য কৃষি দপ্তর বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করছে। সেক্ষেত্রে এ ধরনের জৈব পদ্ধতি নিঃসন্দেহে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের একটি অনুষঙ্গ। কৃষকদের ঐ পদ্ধতিতে অভ্যস্ত করানোর চেষ্টা করা হবে।

ইত্তেফাক/এমআর