বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নির্ধারিত দামের চেয়ে লিটারে ৯ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন

আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২১, ০৭:৩৯

ভোজ্য তেলের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সরকার তেলের নতুন দর নির্ধারণ করে দিলেও তা মানা হচ্ছে না। রাজধানীর কোনো বাজারেই নির্ধারিত দরে খোলা সয়াবিন তেল ও পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছে না।

শুক্রবার রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ ও তুরাগ এলাকার নতুন বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা ও সুপার পাম অয়েল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে; যা নির্ধারিত দরের চেয়ে লিটারে যথাক্রমে ৪ থেকে ৯ টাকা ও ১২ থেকে ১৭ টাকা বেশি। অথচ গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ ভোজ্য তেল পরিশোধনকারী ও বনস্পতি উত্পাদক সমিতি বলেছে, এখন থেকে খুচরা বাজারে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল সর্বোচ্চ ১৩৬ টাকা ও সুপার পাম অয়েল ১১৮ টাকায় বিক্রি হবে।

আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন ও অপরিশোধিত পাম তেলের দাম বাড়ায় বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে খোলা সয়াবিন ও পাম অয়েলের নতুন এই দাম নির্ধারণ করা হয়েছে বলে সমিতিটি জানিয়েছে। আগে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের নির্ধারিত দাম ছিল ১২৯ টাকা। লিটারে ৭ টাকা বাড়িয়ে নতুন দর নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সুপার পাম অয়েলের দাম লিটারে ২ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ছিল ১১৮ টাকা। কিন্তু এখন নতুন নির্ধারিত দরেও কোথাও খোলা সয়াবিন, পাম অয়েল কিনতে পারছেন না ভোক্তারা।

সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গতকালের খুচরা বাজারদরের প্রতিবেদনেও নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশিতে খোলা সয়াবিন ও সুপার পাম অয়েল বিক্রির বিষয়টি তুলে ধরেছে। ভোক্তাদের জিজ্ঞাসা, তাহলে দাম নির্ধারণ করে কি লাভ হলো? তবে নির্ধারিত দরের ভেতরেই পাওয়া যাচ্ছে ৫ ও ১ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল। গতকাল বাজারে ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন ৬৮০ থেকে ৭৪০ টাকা ও ১ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

তুরাগ এলাকার একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের বিক্রেতা সাদ্দাম হোসেন বলেন, ভোজ্য তেল উত্পাদক কোম্পানিগুলো থেকে এখনো নতুন নির্ধারিত দরের বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহ করা হয়নি। এছাড়া আগের তেল আগের দরেই বিক্রির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কোম্পানিগুলো থেকে। তাই কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে। নতুন তেল এলে নতুন দরে বিক্রি করা হবে।

সর্বশেষ যে দর নির্ধারণ করা হয়েছে তাতে খুচরা পর্যায়ে বিক্রির জন্য ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন সর্বোচ্চ ৭৬০ টাকা ও ১ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬০ টাকা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, টিসিবির হিসেবে, গত এক বছরে দেশে খোলা সয়াবিন ৫০ দশমিক ৭৯ শতাংশ, সুপার পাম অয়েল ৫২ দশমিক ৩০ শতাংশ, ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন ৪৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ ও ১ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন ৪৫ দশমিক ২৪ শতাংশ দাম বেড়েছে।

স্বস্তি ফিরছে পেঁয়াজে

স্বস্তি ফিরছে পেঁয়াজের বাজারে। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজে ২ থেকে ৭ টাকা পর্যন্ত কমেছে। গতকাল বাজারে প্রতি কেজি দেশী পেঁয়াজ ৫৮ থেকে ৬৫ টাকা ও আমদানিকৃত পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়। যা এক সপ্তাহ আগে যথাক্রমে ৬০ থেকে ৭০ টাকা ও ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলেছেন, বাজারে আমদানিকৃত পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। তাই দাম কিছুটা কমেছে। তবে ডিসেম্বরে নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসলে দাম অনেক কমে আসবে। এদিকে বাজারে সপ্তাহের শেষে চিনি ও ব্রয়লার মুরগির দাম আবার বেড়েছে। গতকাল বাজারে প্রতি কেজি চিনিতে ২ টাকা বেড়ে ৮০ থেকে ৮২ টাকা ও ব্রয়লার মুরগিতে ১০ টাকা বেড়ে ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকায় বিক্রি হয়। এছাড়া সবজির দাম এখনো চড়া। ৪০ টাকা কেজির নিচে কোনো সবজি নেই বললেই চলে। তবে ভোক্তাদের জন্য সুখবর বলতে, আটা, ময়দা ও মাঝারি মানের চালের দাম কমেছে। খোলা সাদা আদা কেজিতে ১ টাকা কমে ৩৩ থেকে ৩৫ টাকা, ময়দায় কেজিতে ৪ টাকা কমে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর মাঝারি মানের চাল পাইজাম/লতার দাম কেজিতে ১ টাকা কমে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে সরু চাল নাজিরশাইল/মিনিকেট কেজিতে ৩ টাকা বেড়ে ৫৮ থেকে ৬৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর মোটা চাল ইরি/স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকায়।

ইত্তেফাক/বিএএফ