রমজানের ঈদের আগে রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আদার দাম ছিল মানভেদে ৮০ থেকে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা। মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সেই আদার দাম এখন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা।
পেঁয়াজ, রসুনের দামও লাগামহীনভাবে বাড়ছে। প্রতি কেজি রসুনের দাম মানভেদে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা পর্যন্ত।
শুক্রবার রাজধানীর কাওরানবাজার, শান্তিনগর ও তুরাগ এলাকার বাজারে খোঁজ নিয়ে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার এ তথ্য পাওয়া যায়। এদিকে হঠাৎ করে লাগামহীনভাবে দাম বাড়ায় ভোক্তারা শংকিত। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষ বিপাকে পড়েছে।
গত মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি-সংক্রান্ত এক পর্যালোচনা বৈঠকে বাণিজ্যসচিব মো. মফিজুল ইসলাম ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে ৮০ টাকার আদা ১৬০ টাকা হলো কেন? আগামী কোরবানির ঈদ আসতে আসতে এটা আরও বেড়ে যাবে। কিন্তু, কেন এটা হবে?
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি ওসামা তাসীর, সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, বাবুবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও আড়তদার আনোয়ার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কিন্তু বৈঠকের পরও আদা, রসুনের দামে হেরফের হয়নি। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, সামনে কোরবানির ঈদ। ঈদে এই পণ্যগুলোর চাহিদা আরো বাড়ে। তাই এখন দাম কমার সম্ভাবনা নেই।
আরো পড়ুন: বাঁশখালীতে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধ’, ২ ডাকাত নিহত
বাবুবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ইত্তেফাককে বলেন, এবার দেশে আদার উৎপাদন কম হয়েছে। শুধু তাই নয়, যেসব দেশ থেকে আদা আমদানি করা হয়। বিশেষ করে ভারত, চীন ও মিয়ানমার, সেসব দেশেরও একই অবস্থা। উৎপাদন কম হয়েছে। ফলে আদার দাম বেশি।
শুক্রবার বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, দেশি আদার সরবরাহ বেশ কম। কোন কোন দোকানী মিয়ারমারের আদাকে দেশি আদা বলে বেশি দামে বিক্রি করছেন। এছাড়া মিয়ানমারের আদা ১৭০ টাকা ও চীনা আদা ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা যায়।
ব্যবসায়ীরা জানান, মিয়ানমার থেকে আদা আনতে ধাপে ধাপে পয়সা খরচ করতে হয়। ফলে আমদানি খরচ বেশি পড়ে। ফলে দাম বেড়ে যায়।
কাওরানবাজারের এক পাইকারী মশলা ব্যবসায়ী বলেন, দেশে এবার আদার আবাদ ভালো হয় নাই। দামতো বাড়বেই।
আদার পাশাপাশি দাম বেড়েছে রসুনের। শুক্রবার রাজধানীর খুচরাবাজারে প্রতি কেজি দেশি রসুন ১০০ থেকে ১১০ টাকা ও আমদানিকৃত রসুন ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। অথচ গত রোজার ঈদের সময় মানভেদে প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়।
ঝাঁজ বাড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজেরও।
খুচরাবাজারে দেশি পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৩২ টাকা ও আমদানিকৃত পেঁয়াজ মানভেদে ২৫ থেকে ২৭ টাকায় বিক্রি হয়। তবে হলুদ, মরিচের দাম বাড়েনি। প্রতি কেজি শুকনা মরিচ ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা ও হলুদ ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ইত্তেফাক/এমআই