বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশ এবং নেপালের মতো ছোট দেশগুলোর বিবিআইএন, বিসিআইএম এবং বিআরআইয়ের মতো আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সহযোগিতা উদ্যোগে অংশ নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। কারণ এ সব দেশগুলোর নিজেদের অভ্যন্তরীণ বাজার আকারে ছোট। কিন্তু তাই বলে চীন বা ভারতের কোন একটির পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, এ সব দেশগুলোকে সকল শক্তির সঙ্গে খোলা মনে সহযোগিতার নীতি অনুসরণ করতে হবে, যাতে পারস্পরিক কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের সর্বোচ্চ সুফল পাওয়া যায়।
২০ জুন কাঠমুন্ডুতে ‘বেল্ট এন্ড রোড ফর ডেভেলপমেন্ট এন্ড প্রসপারিটি অফ সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক ৪র্থ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের একটি অধিবেশনে প্যানেল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। দুই দিনের এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করে নেপাল-চায়না ফ্রেন্ডশিপ ফোরাম (এনসিএফএফ)।
ড. আতিউর তার আলোচনায় বিবিআইএন, বিসিআইএম এবং বিমসটেকের মতো ফোরামের মাধ্যমে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো কিভাবে নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য বাড়িয়ে লাভবান হতে পারে তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, একই সময়ে চীনও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নিজের প্রভাব বাড়ানোর জন্য বেল্ট এন্ড রোড ইনিসিয়েটিভ (বিআরআই) হাতে নিয়েছে। এই বিআরআই থেকেও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো সুফল পেতে পারে। তবে এ জন্য চীন ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কের দৃশ্যমান উন্নতি ঘটতে হবে।
আরো পড়ুন: ইরানকে ট্রাম্পের ‘হুঙ্কার’
ড. আতিউর আরও বলেন, আঞ্চলিক সহযোগিতা ও বাণিজ্য সংক্রান্ত নীতি সিদ্ধান্তগুলোকে হতে হবে ভবিষ্যতমুখী এবং সুবিবেচনাপ্রসূত। সকল বাণিজ্য-সহযোগী দেশগুলোর সঙ্গেই সুসম্পর্ক রক্ষার চেষ্টা করতে হবে। বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য ছোট দেশগুলোর নীতি-নির্ধারকদের ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতি এবং বাস্তবমুখী নীতির ওপর নির্ভর করতে হবে, যাতে নিজ নিজ দেশের জন্য সর্বোচ্চ সুফল নিশ্চিত করা যায়।
সবশেষ তিনি বলেন, ভারত, চীন, জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ সকল বড় বড় অর্থনীতি থেকেই বর্তমানে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করা হচ্ছে। তবে আরও এগিয়ে যেতে চাইলে আমাদেরকে ব্যবসা সহজিকরণ সূচকে উন্নতি করাসহ পুরো বিনিয়োগ পরিবেশের উন্নয়ন ঘটাতে হবে।
নেপাল সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রী প্রদীপ কুমার গ্যাওয়ালি সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নেপালে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত মিস হউ ইয়াঙ্গকি। বাংলাদেশ সরকারের সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন। উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ঝ্যাঙ জিয়াডং, ভারতের সাবেক কূটনীতিক এম.কে. ভদ্রকুমার এবং রাজনীতিবিদ ও বিবেকশীল পার্টির মুখপাত্র ড. সুরইয়া রাজ আচার্য। অধিবেশন সঞ্চালনা করেন হিমাল সাউথ এশিয়ানের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক কনক মণি দীক্ষিত।
ইত্তেফাক/জেডএইচ