শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

দারিদ্র্য বিমোচনে প্রাণিসম্পদ

আপডেট : ২৪ আগস্ট ২০১৯, ০৪:১৩

সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে হাওরাঞ্চলীয় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থসামাজিক উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে ৭টি জেলার ৩৯টি উপজেলায় এর কার্যক্রম বিস্মৃত করা হবে। হাওরাঞ্চলীয় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন, মাথাপিছু আমিষ গ্রহণ বৃদ্ধি এবং পুষ্টি নিরাপত্তায় চার বছর মেয়াদি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য ১২৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ের একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা ইতিমধ্যে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হাওর অঞ্চলে হাঁস-মুরগি, ছাগল ভেড়া পালন হতে পারে অপার সম্ভাবনাময় আয়ের উৎস। কিন্তু অত্র এলাকায় এখনো উন্নত প্রযুক্তিতে প্রাণিপালন না হওয়ায় প্রাণিসম্পদের উত্পাদনশীলতা ও উত্পাদনদক্ষতা কোনটিই সন্তোষজনক নয়। রোগের প্রাদুর্ভাব, অনুন্নত প্রযুক্তি, সঠিক খামার ব্যবস্থাপনার অভার, নিম্নমানের স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও কারিগরি সেবা, অপর্যাপ্ত কারিগরি জ্ঞান, খামারি ও সংস্থার মধ্যে সমন্বয়হীনতা হাওর অঞ্চলে প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন ও উত্পাদনের প্রধান অন্তরায়। ভৌগোলিক কারণে এদেশের হাওরাঞ্চলসহ খুবই দুর্গম এবং গ্রামগুলো মূল ভূখণ্ড হতে বিচ্ছিন্ন। দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি জেলা তথা সুনামগঞ্জ জেলা, হবিগঞ্জ জেলার বড় অংশ, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও মৌলভীবাজার জেলার অংশবিশেষসহ বৃহত্তর সিলেট অঞ্চল এবং কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার বড় অংশ হাওর দিয়ে বেষ্টিত। বাংলাদেশে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুসারে দেশে বর্তমানে মোট ৩৭৩টি হাওর রয়েছে। যার আয়তন প্রায় ৮৫৯ হাজার হেক্টর যা মোট হাওর জেলার আয়তনের ৪৩ শতাংশ।

দারিদ্র্য  বিমোচনে  প্রাণিসম্পদ

হাওর অঞ্চলের জনগোষ্ঠী জীবিকার জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষি, মত্স্য ও হাঁস-মুরগি পালনের ওপর নির্ভরশীল। হাঁস-মুরগি, ছাগল ও ভেড়া অত্র অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও পরিবর্তনশীল জলবায়ুর সঙ্গে সহজে অভিযোজিত হতে সক্ষম বলে উল্লেখ করেছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। এজন্য প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে এই অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক অবস্থা পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য শিগগিরই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) উত্থাপন করা হবে। অনুমোদন পেলে চলতি অর্থবছর শুরু করে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

আরও পড়ুন: গণহত্যার উদ্দেশ্যেই রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ:জাতিসংঘ

উল্লেখ্য, হিমালয়ের পবর্তমালা হতে উত্পন্ন হয়ে দক্ষিণে প্রবাহিত বিশ্বের অন্যতম বৃহত্ দুটি নদী গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি আমাদের দেশের ওপর দিয়ে বঙ্গোপসাগারে গিয়ে পড়েছে। তাছাড়া লুসাই পাহাড় থেকে উত্পন্ন বরাক নদীর পানিও বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বঙ্গোপসাগরে বহমান। বরাক নদী বাংলাদেশে প্রবেশ করে সুরমা ও কুশিয়ারা নামে দুটি শাখায় ভাগ হয়েছে। এ সুরমা ও কুশিয়ারা নদী দুটির অববাহিকাতেই বাংলাদেশের বিখ্যাত হাওরগুলো অবস্থিত।

ইত্তেফাক/কেকে