বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ডাকসু বাতিল সহসাই নির্বাচন হচ্ছে না

আপডেট : ২৪ জুন ২০২০, ০৩:২৮

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে তিন দশক পর অনুষ্ঠিত হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। নানা আন্দোলন, সংগ্রাম আর বিতর্কের পর সচল হওয়া ডাকসু দেড় বছর পর ফের অচল হয়ে পড়েছে। নির্ধারিত ৩৬৫ দিনের মেয়াদ পার হয়ে আরো ৯০ দিনের অতিরিক্ত মেয়াদের মধ্যে নির্বাচন না হওয়ায় গঠনতন্ত্র অনুসারে বাতিল হয়ে গেছে ডাকসু। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নির্বাচনের দাবি ছাত্র সংগঠনগুলোর। হল সংসদের বিদায়ী সদস্যদেরও একই দাবি। তবে সহসাই নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

ইতিমধ্যে গঠনতন্ত্রের নিয়ম মেনে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানী, সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) সাদ্দাম হোসেনসহ অনেকেই। হল সংসদের অনেক শিক্ষার্থীও নিজস্ব পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। এসব নির্বাচিত প্রতিনিধি বলছেন, গণতান্ত্রিক নিয়ম অনুসরণ করে ও নৈতিক ভিত্তি ঠিক রাখার মাধ্যমে তারা তাদের কাজ করে যাবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।

প্রসঙ্গত, ডাকসুর গঠনতন্ত্রের ৬-এর (গ) ধারায় বলা হয়েছে, ‘নির্বাচিত পদাধিকারীগণ ৩৬৫ দিনের জন্য দায়িত্ব পালন করবেন। যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন না করা যায়, তাহলে অতিরিক্ত সময় হিসেবে অনূর্ধ্ব ৯০ দিন দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। এর মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংসদ বাতিল হয়ে যাবে।’ গঠনতন্ত্রের হিসেবে গত সোমবার মেয়াদ শেষ হয় ডাকসুর।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি সূত্র বলেছে, খুব শিগিগরই নির্বাচন দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই প্রশাসনের। নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা, ক্যাম্পাসে সহাবস্থান করা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময়, চিফ রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ, তাপশীল ঘোষণাসহ নির্বাচনী কর্মযজ্ঞের কোনোটিই এখনো পরিকল্পনায় নেই প্রশাসনের।

আরও পড়ুন: এবার পাপুলের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে এনবিআর

তবে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচনের কথা বলছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের কোনো সুযোগ নেই। সবকিছু নিয়ম অনুযায়ী হবে এবং নিয়মের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।’ পরবর্তী ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে উপাচার্য জানান, ‘উপাচার্যের একক সিদ্ধান্তে ডাকসু নির্বাচন হয় না। এটি একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ। এতে অনেক স্টেকহোল্ডার জড়িত। তাদের সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন।’

সরকারবিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলোর পাশাপাশি ছাত্রলীগেরও কেউ কেউ মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নির্বাচন না করার পাঁয়তারা করছে। ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেহেদী হাসান নোবেল বলেন, ডাকসু নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রতারণা করবে না বলেই বিশ্বাস। ডাকসুর ছাত্রলীগের প্যানেলের বিদায়ী কমিটির সদস্য তানভীর হাসান সৈকত বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নির্বাচন না দেওয়ার পক্ষে এবং এর সঙ্গে কিছু ছাত্রনেতা মিলে ডাকসুকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি ঠিক হলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বসে আলোচনা করব। ডাকসু নির্বাচন যাতে কন্টিনিউ হয় সেটাই সাধারণ শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষা।

ইত্তেফাক এসি