বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ঢাবি: বাজেটের সাথে বাড়ছে ঘাটতি ব্যয়ও

আপডেট : ২৫ জুলাই ২০২০, ২২:৫৫

গত তিন অর্থ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাজেট বেড়েছে ২০৫ কোটি টাকা। কিন্তু এ তিন বছরে ঘাটতি বাজেটও বেড়েছে। তিন বছরের ব্যবধানে এ বাজেট বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৪ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরেও এ ঘাটতি বাজেট ৫০ কোটি ৫০ লাখ টাকায়। চার বছরের হিসেবে ঘাটতি বাজেট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ কোটি ৭১ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে অধিবেশনে অনুমোদন পায় ৮৬৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। সেখানে গবেষণার জন্য বরাদ্দ রাখা হয় মাত্র ৩১ কোটি ৪১ লাখ টাকা। 

বাজেট বক্তৃতায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কোষাধ্যক্ষ ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, সরকার তথা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে আমরা যে অর্থ বরাদ্দ পেয়ে থাকি তা দিয়ে অনেকটা অভাব-অনটনের মধ্যেই আমাদের ব্যয় নির্বাহ করতে হয়। বিগত পাঁচ বছরে এ প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কোন আয় বাড়েনি। ফলে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমে কাঙ্খিত অগ্রগতি অর্জন ব্যাহত হচ্ছে। 

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দেওয়া হিসেবে দেখা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ঘাটতি ব্যয় ছিলো ৩০ কোটি ৭৮ লাখ ২০ হাজার টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এ ঘাটতি ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩৮ কোটি ৬৬ লাখ ২৬ হাজার টাকায়। এর পরের অর্থবছরে এ ঘাটতি বাড়তে থাকে আরও। ৪৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ঘাটতি বাজেটে সংশোধিত ঘাটতি ছিলো ৪৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরেও ঘাটতি বাজেট রাখা হয়েছে ৫০ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় প্রাচীনতম পত্রিকার সম্পাদকের মৃত্যু 

এসব ঘাটতি বাজেটের অধিকাংশই খরচ হয় সরবরাহ ও সেবা খাতে। এ খাতের অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, আপ্যায়ন, যানবাহন, আইন সংক্রান্ত বিষয়, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ইন্টারনেট, পানি, বইপত্র ক্রয়, গবেষণা প্রবন্ধ ও জার্নাল প্রকাশনা, ব্যবস্থাপনা ব্যয়, ক্রীড়া কার্যক্রম, অনুদান ইত্যাদি। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এ খাতে ঘাটতি ছিলো ৪৮ কোটি ২০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। অন্যান্য খাত থেকে উদ্বৃত্ত অর্থ নিয়ে এ খাতে ব্যয় করা হয়। এর পরের অর্থ বছরে এ খাতে ঘাটতি থাকে ১০ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এ বছর শিক্ষকদের বেতন-ভাতায় থাকে বড় ধরনের ঘাটতি। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ঘাটতি ছিলো সবচেয়ে বেশি। এ বছর এ খাতে ঘাটতি বরাদ্দ দেওয়া হয় ৮১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।  বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০-২৫ শতাংশ ব্যয় এ খাতেই ব্যয় হয়। 

তবে এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি নন বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘এখন যারা দায়িত্বে আছে তারা কথা বলবে। আমিতো কোন দায়িত্বে নেই। এখন এসব নিয়ে কথা বললে বিতর্ক তৈরি হবে।’ 

এ সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলছেন, ‘নুন্যতম চাহিদার তুলনায় যদি যোগান কম থাকে তবে বাদবাকিটা ঘাটতি থাকে। ক্রমান্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম, পরিধি বাড়ছে। কিন্তু এখানে চাহিদার তুলনায় বাজেট কিছুটা কম থাকে, এ কারণে আমাদের ঘাটতিও বছর প্রতি বাড়ছে।’

ইত্তেফাক/এএএম