শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

১০ মিনিটের সীমাবদ্ধতায় ক্ষুব্ধ ঢাবির সুফিয়া কামাল হলের ছাত্রীরা

আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২০, ১৪:০৯

করোনা ভাইরাসকালীন পরিস্থিতির জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো বন্ধ হওয়ায় হল থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে হল কর্তৃপক্ষ। সবগুলো হলে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনতে অনির্ধারিত সময় দেওয়া হলেও কবি সুফিয়া কামাল হলে এই সময় সীমাবদ্ধ। মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে রুম ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে হল কর্তৃপক্ষের। এ সময়কে নামমাত্র বলে অভিযোগ করছেন ছাত্রীরা। হল প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের ফলে অল্প সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনতে পারছেন না বলেও অভিযোগ করছেন ছাত্রীরা।

ছাত্রীদের অভিযোগ, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি শুরু হলে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ দিলে অনেক ছাত্রী বাড়ি যাওয়ার সময় তেমন দীর্ঘদিনের জন্য তারা প্রস্তুতি নেননি। এমনকি প্রয়োজনীয় কাপড়-চোপড়ও নয়। এখন হল থেকে প্রয়োজনীয়  জিনিসপত্র আনতে গেলে সেখানে মাত্র ১০ মিনিট সময় দেওয়া হয়। এটি তাদের জন্য যথেষ্ট সময় নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো হলে বেঁধে দেওয়া সময় নেই। সুফিয়া কামাল হলের ক্ষেত্রে কেন এমন হবে?
  
নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন ছাত্রীর সাথে কথা বলে জানা যায়, জুলাইয়ের শেষের দিকে কবি সুফিয়া কামাল হলের ছাত্রীদের জিনিসপত্র নিয়ে আসার সুযোগ দেওয়া হলেও মাত্র ৫ থেকে ১০ মিনিট হলে অবস্থানের সুযোগ দেওয়া হয়। তারা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণার পর অনেক শিক্ষার্থী নামমাত্র জিনিসপত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়। কিন্তু দীর্ঘ অবস্থানের জন্য তাদের কোন ধরনের প্রস্তুতি ছিলো না। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র না নিতে পারায় তাদেরকে অনেকটা ঝামেলার মধ্যে পড়তে হয়। অনেককে একাধিকবারও আসতে হয়। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন হাউজ টিউটর বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট একটা সময় দেই এবং নিজেরা তাদের সাথে যাই, তদারকি করি। এক রুমে আটজন ছাত্রী থাকে। ভূলক্রমে কারও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেউ নিয়ে গেলে তখন এর দায় আমাদের উপর বর্তাবে। তাছাড়া কোনো ছাত্রীর কিছু হারিয়ে গেলে তার অপূরণীয় ক্ষতি হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। যার কারণে আমরা নিজেরা তদারকি করি এবং তদারকি করতে গিয়ে তাদের বেশী সময় দিতে পারি না।
 
তিনি জানান, আমরা জানি এত কম সময় যথেষ্ট নয়। কিন্তু আমাদের এক ফ্লোরে ১০৪ জন শিক্ষার্থী থাকে। প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ জন করে শিক্ষার্থী প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিতে আসলে তাদের তো ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় দিতে পারি না। তাছাড়া আমাদের অনলাইন ক্লাস রয়েছে, গবেষণা কার্যক্রম রয়েছে, পরিবার রয়েছে। এসবও তো আমাদের দেখতে হবে।

এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শামীম বানু বলেন, আমাদের দুই হাজার ছাত্রী কিন্তু হাউজ টিউটর, কর্মকর্তা-কর্মচারী কম। সে অনুযায়ী আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ জন ছাত্রী আসলে তাদের সবাইকে ১০ মিনিটের বেশী সময় আমরা দিতে পারি না। আবার সবাইকে ইচ্ছেমতো সময় দিতে গেলে দেখা যায়, কেউ ছবি তুলছে, কেউবা জিরিয়ে নিচ্ছেন। তাছাড়া ছাত্রীদের জিনিসপত্রের নিরাপত্তার জন্য এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
 
তিনি জানান, আমরা প্রথমে সুযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু কিছু ছাত্রী নিজেদের কাজ সারতে বেশী সময় নিচ্ছিলো। তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে এ সময় বেঁধে দেই আমরা। তবে কারও যদি বেশী সময়ের প্রয়োজন হয়, আমার কাছে অভিযোগ দেয় আমি তাদের বিষয়টি বিবেচনা করবো।

ইত্তেফাক/এএম