আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে সরগরম রাবি

আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে করোনাকালেও সরগরম হয়ে উঠেছে উত্তরাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাস। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এর সফর উপলক্ষে প্রায় দুই সপ্তাহ উভয়পক্ষ নমনীয় থাকলেও ফের পরস্পরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ১৪ ও ১৫ নভেম্বর পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী সফর করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রাবি শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর আব্দুস সোবহানের অনুসারী বলে পরিচিত শিক্ষকরা ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক’ নির্মাণে দুর্নীতি ও জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের অবমাননায় জড়িত ‘দুর্নীতিবাজ’ শিক্ষকদের চাকরি থেকে বহিষ্কারসহ বিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ক্যাম্পাসে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। ক্যাম্পাসের প্রশাসন ভবনের পশ্চিম চত্ত্বরে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন শেষে ভাস্কর্য তৈরিতে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে উপাচার্যকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এ কর্মসূচিতে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ভারপ্রাপ্ত ছাত্রউপদেষ্টা অধ্যাপক লুৎফর রহমান, পরিবহন দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক এফএম হায়দার, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক রবিউল ইসলাম, বঙ্গবন্ধুহলের প্রভোস্ট অধ্যাপক রওশন জাহিদ, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মো. শামীম হোসেন, সহকারী প্রক্টর হুমায়ুন কবীর প্রমুখ।
আরো পড়ুন: ঢাবির সাবেক উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিকের পিতার ১৪ তম মৃত্যুবার্ষিকী কাল
অন্যদিকে রাবি ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক’ নির্মাণ ও কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের উন্নয়নে’র দুর্নীতিতে অভিযুক্ত শিক্ষকদের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের একাংশ বর্তমান উপাচার্যের বিরুদ্ধে শর্ত শিথিল করে শিক্ষক ও কর্মকর্তা নিয়োগের অভিযোগ তুলেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিনস কমপ্লেক্সের হলরুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এই দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে রাবি মেডিকেল সেন্টারসহ কয়েকটি বিভাগে শিক্ষকসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা।
তারা দাবি করেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট ১৯৭৩ অনুযায়ী অথরিটি ও ডীনসমূহের নির্বাচন সম্পন্ন না করেই নজিরবিহীনভাবে ৫০৩ তম সিন্ডিকেটে শিক্ষক প্রতিনিধি ছাড়াই নিয়োগ বোর্ড গঠন ও নিয়োগে সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে, যা অনৈতিক। শিক্ষকরা সকল নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে ইউজিসির গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত রাবিতে সবধরণের নিয়োগ বন্ধের দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে দুর্নীতি বিরোধী শিক্ষকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম টিপু, অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদী ও অধ্যাপক একরাম উল্লাহ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
ইত্তেফাক/এএএম