শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

টিএসসি সংস্কারের পরিকল্পনা থাকলেও সিদ্ধান্ত হয়নি এখনো

আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২০, ১০:১৮

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) সংস্কারের আলোচনা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। ২০০৮ সালে প্রথম আলোচনা ওঠে সাংস্কৃতিক মিলনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এই স্থাপনা সংস্কারের। ঐ সময় টিএসসির বর্তমান সুইমিংপুলটি ভেঙে সেখানে পাঁচতলা ভবন তৈরির কথা জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে সেই উদ্যোগ কার্যকর হয়নি। এরপর বেশ কয়েকবার আলোচনায় আসে টিএসসি সংস্কারের বিষয়টি। সর্বশেষ চলতি বছরের ২ সেপ্টেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার পর স্থাপনা সংস্কারের বিষয়টি আবারও আলোচনায় আসে। ঐ কনফারেন্সে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ভবনটিকে তিনি আধুনিক ভবন হিসেবে দেখতে চান। সেই লক্ষ্যে তিনি ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ভবনের নকশা প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী শেখ হাসিনা সেদিন বলেছিলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়। যেহেতু টিএসসি ছাত্র ও শিক্ষকদের কেন্দ্র, তাই আমরা টিএসসি ভবনকে আধুনিক পদ্ধতিতে নতুন করে গড়তে চাই।’

প্রধানমন্ত্রীর ঐ বক্তব্যের পর টিএসসি ভবন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়। গত ৩০ সেপ্টেম্বর এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘১৯৬৪ সালে টিএসসি নির্মিত হয়েছিল। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৮০০, শিক্ষকের সংখ্যা ২০০ থেকে কিছু বেশি। এটাকে বিবেচনায় রেখে এটুকু জায়গায় টিএসসির ভবন, মিলনায়তন ও ফ্যাসিলিটিজ তৈরি করা হয়েছিল। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ হাজারের বেশি শিক্ষক আর ৪০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী আছেন। কিন্তু টিএসসি আগের মতোই আছে। প্রধানমন্ত্রী সেজন্যই আমাদের এটা পুনর্বিন্যাস করার নির্দেশনা দিয়েছেন।’

স্থাপনাটি ভেঙে বহুতল ভবন হবে এমন চিন্তা-ভাবনার বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বলছেন, টিএসসি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম স্থাপনা। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্মিলন ও সাংস্কৃতিক চর্চাকেন্দ্র হিসেবে এর রয়েছে ঐতিহ্যবাহী ইতিহাস। এটি ভেঙে ফেলা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্বুদ্ধিতার পরিচয় হবে। বিষয়টি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, ‘টিএসসির বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে জানুয়ারিতে গণপূর্ত অধিদপ্তরের সঙ্গে আমাদের সভা রয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টিএসসির জন্য পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা করতে গণপূর্ত অধিদপ্তরকে দায়িত্ব দিয়েছেন।

কেমন হবে টিএসসি
সংস্কারের পর টিএসসিতে কী কী সুযোগ-সুবিধা থাকবে, সে বিষয়ে টিএসসির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সৈয়দ আলী আকবর জানান, টিএসসিতে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মহড়াকক্ষ, ব্যায়ামাগার, টিএসসিভিত্তিক সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর জন্য আধুনিক সুবিধাসংবলিত কক্ষ, আন্তঃক্রীড়াকক্ষ, পৃথক ক্যাফেটেরিয়া, শিক্ষক মিলনায়তন, গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য তিনতলাবিশিষ্ট স্থান, অতিথিকক্ষসহ বেশ কিছু আধুনিক সুবিধা থাকবে।

ইত্তেফাক/কেকে