শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

খুবির সাত শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি

আপডেট : ১৫ জানুয়ারি ২০২১, ০১:০৪

জুনিয়র শিক্ষার্থীদের রাতভর শারীরিকভাবে নির্যাতন ও গালিগালাজ করার অপরাধে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) পাঁচজন এবং তদন্ত ও একাডেমিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করার দায়ে আরো দুইজন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি প্রদান করেছে কর্তৃপক্ষ। গত বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক ও শৃঙ্খলা বোর্ডের সদস্য সচিব মো. শরীফ হাসান লিমন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, শারীরিকভাবে নির্যাতন ও গালিগালাজ, অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে দিয়ে মারধর, স্বাভাবিক চলাচলে বিঘ্ন ঘটানো ও হুমকি প্রদানের অপরাধে ইংরেজি ডিসিপ্লিনের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মশিউর রহমান রাজাকে দুই বছর (৪ টার্ম) ও শারীরিকভাবে নির্যাতন ও গালিগালাজ করার অপরাধে একই ডিসিপ্লিনের ৪র্থ বর্ষের রাজ বর্মন বিধানকে দুই বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

ঘটনার সময় উপস্থিত থেকে নির্যাতনে পরস্পরকে উস্কানি দেওয়ার অপরাধে একই ডিসিপ্লিনের মিনহাজুর রহমানকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার, সাবেরুল বাশার নিরবের এক বছরের জন্য সার্টিফিকেট স্থগিত এবং ফাহাদ রহমান অঝোরকে অভিভাবকসহ মুচলেকা প্রদানের শর্তে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এছাড়া বাংলা ডিসিপ্লিনের ৩য় বর্ষের মোবারক হোসেন নোমানকে দুই জন শিক্ষকের পথ আটকানো ও তাদের সঙ্গে  গুরুতর অসদাচরণ করা, তদন্ত কমিটির সম্মুখে বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি ও অন্য শিক্ষার্থীকে কমিটির সম্মুখে বক্তব্য না দেয়ার জন্য চাপ প্রদান এবং একাডেমিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করার অপরাধে এক বছরের (২ টার্ম) জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের ৪র্থ বর্ষের ইমামুল ইসলামকে দুইজন শিক্ষকের পথ আটকানো ও তাদের সঙ্গে গুরুতর অসদাচরণ করা, তদন্ত কমিটির সম্মুখে বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি, অন্য শিক্ষার্থীকে কমিটির সম্মুখে বক্তব্য না দেয়ার জন্য চাপ প্রদান, একাডেমিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করা, ব্যক্তিগতভাবে পাঠানো তদন্ত কমিটির গোপনীয় চিঠি উস্কানিমূলক শিরোনাম দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করা বা কাউকে দিয়ে পোস্ট করানো ও তদন্ত কমিটির সাক্ষাৎকার গোপনে রেকর্ড করার চেষ্টার অপরাধে দুই বছর (৪ টার্ম) বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক ও শৃঙ্খলা বোর্ডের সদস্য সচিব মো. শরিফ হাসান লিমন বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে আমরা শাস্তি দিতে চাইনি। তবে শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফাহাদ রহমান অঝোর তদন্তের বিষয়টি দ্রুত সুরাহা করবার আবেদনের প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছে। গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোর ব্যাপারে কোনো শিক্ষার্থী চাইলে একাডেমিক কাউন্সিলে আপিল করতে পারবে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৭ জানুয়ারি খুবির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ইংরেজি ডিসিপ্লিনের পাঁচ শিক্ষার্থীকে রাতভর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। নির্যাতিত শিক্ষার্থীরা বিচার চেয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন। অপরদিকে একই বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বেতন-ফি কমানোসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় দুই শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচারণ করলে ওই শিক্ষকদের অভিযোগের ভিত্তিতে এসকল সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

ইত্তেফাক/এসআই