ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খুলে দেয়া এবং একাডেমিক কার্যক্রম পুরোদমে চালু করতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার (২৫ মে) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে উপাচার্যের বাসভবন পর্যন্ত এ বিক্ষোভ করেন তারা। এর আগে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ক্যাম্পাস খুলে দেয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ব্যানারে মানববন্ধনে অংশ নেন অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী।
মানববন্ধনে সমাজকল্যাণ বিভাগের শিক্ষার্থী ফাতেমা তাসনীম বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানার কর্মীরা অফিস করছেন। কিন্তু করোনার কারণে তাদের কেউ মারা যাননি। তাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলে শিক্ষার্থীরা মারা যাবে এ কথাটি আসলো কীভাবে? শিক্ষার্থীরা সাধারণ জনগণ ও অন্য পেশাজীবীদের থেকে আরও বেশি সচেতন। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাসে ফিরতে চাই।
এ সময় তারা হাফিজুরের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন এবং দায়ীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান। এছাড়া শিক্ষার্থীরা আরও দুইটি দাবি জানান। সেই দুটি হলো, করোনার ইস্যুতে ২৯ মের পর আর ছুটি না বাড়ানো এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুরো ক্যাম্পাস সিসিটিভির আওতায় নিয়ে আনা।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী হৃদয় আহমেদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের হল না খোলার কারণে আমাদের অনেকের মানসিক সমস্যা শুরু হয়েছে। আমার প্রতিদিনই মনে হয় আমি কোন মানসিক হাসাপাতালে আছি। কারণ আমার প্রতিটি সময়ই যন্ত্রণার মধ্যে কাটে। আমি ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। ২০২০ সালে আমার সেশন শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু ক্যাম্পাস বন্ধ থাকার কারণে সেটিও আর সম্ভব হয়নি।
প্রধানমন্ত্রীকে শিক্ষার্থীদের প্রতি নজর দেয়ার আহ্বান জানিয়ে এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পাবজিসহ বিভিন্ন ভিডিও গেমসে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে, পিতামাতার অবাধ্য হচ্ছে। যেসব শিক্ষার্থী ডিসিপ্লিন জীবন যাপন করতো সেখান থেকে তারা পিছিয়ে যাচ্ছে। আগামীর ভবিষ্যতকে কেনো আপনারা অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। অনতিবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
বিক্ষোভ শেষে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আসিফ মাহমুদ বলেন, আগামীকাল বুধবার শিক্ষামন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। সেই ব্রিফিংয়ে আমরা নজর রাখবো। ব্রিফিং থেকে হল খোলার ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোন বার্তা না আসলে তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা করবেন বলে জানান এই শিক্ষার্থী।
ইত্তেফাক/এমএএম