শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

অল্প বৃষ্টিতেই জাবির সড়কে জলাবদ্ধতা, পথচারীদের দুর্ভোগ

আপডেট : ২২ জুন ২০২১, ১৮:৪১

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অভ্যন্তরীণ সড়কে খানাখন্দের কারণে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগে পড়ছেন পথচারীরা। 

মঙ্গলবার (২২ জুন) সকাল থেকে বৃষ্টিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়কের খানাখন্দে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক (ডেইরি গেইট), ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি), অমর একুশ, শহীদ মিনার, বটতলা ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ সংলগ্ন সড়কের খানাখন্দে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে গেরুয়ার সংযোগ সড়কে বড় ধরণের জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।   

জানা যায়, মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও সপ্তাহে অফিসগুলো খোলা থাকছে পাঁচদিন। এছাড়া করোনা ভাইরাসের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম অনলাইন মাধ্যমে চলছে। তবে টিউশনি ও চাকুরির প্রস্তুতি নেওয়ায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের আশেপাশেই অবস্থান করছেন। ফলে ক্যাম্পাসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদেরও যাতায়াত রয়েছে। তবে বৃষ্টিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় দুর্ভোগে পড়ছেন তারা।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মাণ কাজের মালামাল স্থানান্তরে বিভিন্ন গাড়ি ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে গাড়িগুলোর ওজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ সড়কের ধারণ ক্ষমতার অধিক। ফলে এ গাড়িগুলো চলাচল করায় সড়কে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। আর বৃষ্টি হলেই সেসব খানাখন্দে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্ট হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়কে চলাচলে দূর্ভোগের কথা জানিয়ে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিবুল হক রনি ইত্তেফাককে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়কে জলাবদ্ধতা এক কথায় তথাকথিত উন্নয়নের ক্ষত। বিশ্ববিদ্যালয়কে সচল করবার প্রস্তুতি হিসেবে রাস্তাঘাট মেরামত করবার কোনো লক্ষণ তো আমাদের দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান না করলেও শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তো আছেন। অফিস খোলা আছে। নানান কাজে শিক্ষার্থীদেরও ক্যাম্পাসে আসতে হচ্ছে। প্রশাসনের উচিৎ দ্রুততম সময়ের মধ্যে রাস্তাঘাট ঠিক করা।

এদিকে বৃষ্টিতে সড়কের খানাখন্দে দীর্ঘদিন পানি জমে না থাকলে মশা জন্মানোর ঝুঁকি নেই জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার ইত্তেফাককে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়কের খানাখন্দে জমে থাকা পানিতে রোদ পড়ায় এডিস মশা জন্মানোর ঝুঁকি নেই। তবে দীর্ঘদিন পানি জমে থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালে কিউলিক্স মশা জন্মানোর সম্ভাবনা আছে। তাই যতদ্রুত সম্ভব বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়কগুলোতে জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রশাসনের উদ্যোগ নেয়া উচিৎ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আবদুস সালাম মো. শরীফ বলেন, আপাতত বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়ক গুলোর খানাখন্দ ঠিক করে জলাবদ্ধতা নিরসনের চিন্তা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মাণ কাজের মালামাল স্থানান্তরে বিভিন্ন গাড়ী ব্যবহারে সড়কে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। তবে উন্নয়ন কাজ শেষ হলেই সড়কের খানাখন্দ ঠিক করবেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অফিস।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অফিসের উপ-পরিচালক প্রকৌশলী ফাহমিদা মাছউদ ইত্তেফাককে বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পের আবাসিক হল নির্মাণ কাজের মালামাল স্থানান্তরে ব্যবহৃত গাড়িগুলোর ওজন বেশি হওয়ায় রাস্তাগুলোর ক্ষতি হচ্ছিল। গতবছর রাস্তাগুলো মেরামত করার জন্য কনস্ট্রাকশন কোম্পানি গুলোর সাথে কথা বলেছিলাম। তারাও বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সড়কগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল সেগুলো মেরামত করেছিল। তবে এ বছর কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা আমার জানা নেই।

ইত্তেফাক/এমএএম