শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নতুন ক্যাম্পাস মাস্টারপ্ল্যানে দীর্ঘসূত্রিতা, জবি ছাত্রলীগের বিক্ষোভ

আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫:১২

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নতুন ক্যাম্পাসের মাস্টারপ্ল্যানসহ সব উন্নয়ন প্রকল্প নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ও দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। 

আজ মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টায় উপাচার্যের কক্ষের সামনে বিক্ষোভ করে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

এসময় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য বরাবর একটি স্বারকলিপি প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপাচার্য কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করেন ও তাদের বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।

জবির নতুন ক্যাম্পাস, মেয়াদ বাড়লেও হয়নি মাস্টারপ্ল্যান

স্বারকলিপিতে তারা বলেন, ‌‘বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যমের খবরে আমরা জানতে পেরেছি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নতুন ক্যাম্পাসের প্রকল্পের তিন দফায় মেয়াদ বাড়লেও এখন পর্যন্ত মাস্টারপ্ল্যানের কোম্পানি নিয়োগ হয়নি। কোম্পানি নিয়োগে জটিলতা তিন বছরে মাস্টারপ্ল্যান কোম্পানি নিয়োগ দিতে পারেনি। আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মাস্টারপ্ল্যান নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠানো হবে বলে আমরা জেনেছি।’

আরও জানা যায়, ২০১৯ সালে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন: ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের জন্য ২৯ কোটি ৫৮ লক্ষ ৯৮ হাজার টাকার ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আরবানাকে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসাবে নিয়োগে সুপারিশ করা হয়। গত ১১ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০২০-২১ আর্থিক বার্ষিক কর্মসূচির সভায় নতুন ক্যাম্পাস প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগ ও মাস্টারপ্লান প্রণয়নের জন্য ক্রয় প্রক্রিয়া পিপিআর অনুযায়ী না হওয়ায় বিষয়টি মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দেয়নি।

পরবর্তীতে মাস্টারপ্ল্যানের কাজের জন্য সিঙ্গেল চয়েজের ভিত্তিতে আরবানা কোম্পানিকে প্রায় ৫ কোটি টাকায় কাজ করার জন্য নির্দিষ্ট করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু নিয়মের ব্যতয় ঘটায় এ সিদ্ধান্তও বাতিল করা হয়। ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টারপ্লানের একটি চিত্র উপস্থাপন করা হয়। ২০২১ সালের ৩ জুন মাস্টারপ্ল্যানের কোম্পানি নিয়োগে জটিলতা ও অনিয়মের কারণে পুরো প্রক্রিয়া বাতিল করেন। গত ২৩ আগস্ট মাস্টারপ্লানের জন্য পূনঃদরপত্র আহ্বানের কথা থাকলেও পূনঃবিজ্ঞপ্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাহায্যে মাস্টারপ্লানের কাজের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর মধ্যে প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত তিন দফায় বৃদ্ধি হয়েছে। মাস্টারপ্লান না হওয়ায় লেক নির্মাণের টেন্ডার বাতিল হয়েছে। আটকে আছে পুরো কাজ। নিজস্ব ব্যাবস্থাপনায় এই কাজটি না করা গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজ আরও দীর্ঘায়িত হবে।

জবির নতুন ক্যাম্পাস, মেয়াদ বাড়লেও হয়নি মাস্টারপ্ল্যান

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস প্রকল্প পরিচালক এবিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। মাস্টারপ্ল্যানের কাজ টেন্ডারের মাধ্যমে হলে নতুন ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত করা যাবে। মাস্টারপ্ল্যান প্রক্রিয়াটির কাজ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ে যাবে। এভাবে কাজটি করলে অনেক দীর্ঘায়িত হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমরা এবিষয়টি নিয়ে শঙ্কিত। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নতুন ক্যাম্পাসের মাস্টারপ্ল্যানসহ সব উন্নয়ন কাজ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় দ্রুত বাস্তবায়ন করতে আপনার সুদৃষ্টি কামনা করছি।

শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক আশরাফুল ইসলাম বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের প্রাণের স্পন্দন। প্রধানমন্ত্রী আমাদের নতুন ক্যাম্পাসের জন্য কেরানীগঞ্জে জায়গা বরাদ্দ দেওয়ার পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো মাস্টারপ্ল্যান ঠিক হয়নি। এখন আবার মাস্টারপ্ল্যান তৈরির কাজ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় না করলে অনেক দীর্ঘ সময় চলে যাবে শুধু মাস্টারপ্ল্যান ঠিক করতে। এতে করে ৫-৭ বছর আর কোনো কাজই হবে না। এজন্য আমরা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দাবি জানাচ্ছি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অতিদ্রুত সব উন্নয়ন কাজের কার্যক্রম শুরু করতে হবে।

ইত্তেফাক/কেকে