শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মাথাপিছু চিকিৎসা ব্যয় বছরে ১০ টাকা!

আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২১, ০৭:২৮

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রায় ১৯ হাজার শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর জন্য বার্ষিক চিকিৎসা বাজেট মাত্র ২ লাখ টাকা। অর্থাৎ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বছরে গড়ে প্রায় ১০ টাকার চিকিৎসা সুবিধা পান। আর চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য রয়েছেন মাত্র দুই জন চিকিৎসক। নেই রোগ নির্ণয়ের যন্ত্রপাতি ও পর্যাপ্ত ওষুধের সরবরাহ। নামে আধুনিক মেডিক্যাল সেন্টার হলেও আধুনিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র মেডিক্যাল সেন্টারটিতে।

সরেজমিনে দেখা যায়, নতুন মেডিক্যাল সেন্টারটিতে প্রাথমিক চিকিত্সার জন্য কয়েকটি উপকরণ থাকলেও রক্ত পরীক্ষা, ইসিজি কক্ষ, প্যাথলজি ল্যাব নেই। তবে ২০২০-২১ সেশনের বাজেটে এসব আধুনিক যন্ত্রাদি কেনার বাজেট থাকলেও সেই টাকা ইউজিসিতে ফেরত গেছে বলে জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আরও দেখা যায়, মেডিক্যাল সেন্টারটিতে শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন মাত্র দুই জন ডাক্তার। মেডিক্যাল সেন্টার পরিচালনায় তিন জন ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হলেও বাকি একজন ডাক্তার নিয়মিত আসেন না।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো মেডিক্যাল সেন্টারটি শুধু একটি কক্ষে সীমাবদ্ধ ছিল। সেখানে নাপা, প্যারাসিটামল ও ঠান্ডার ওষুধ ছাড়া আর কিছুই পেতেন না শিক্ষার্থীরা। ছিল না আধুনিক কোনো সরঞ্জাম। জীর্ণ মেডিক্যাল সেন্টারটি উন্নয়নের জন্য কয়েক দফা আন্দোলন ও অনশন করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে মেডিক্যাল সেন্টার আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সর্বশেষ করোনার প্রকোপ বাড়লে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে পুরোনো মেডিক্যাল সেন্টার স্থানান্তর করে ভাষা শহিদ রফিক ভবনের নিচে আধুনিক সরঞ্জামাদিসহ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত আধুনিক সরঞ্জামাদি ছাড়াই তড়িঘড়ি উদ্বোধন করা হয়।

এ বিষয়ে উপপ্রধান চিকিৎসক মিতা শবনম বলেন, ১৯ হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থীর জন্য শুধু আমরা দুই জন ডাক্তার আছি। মাঝে মাঝে রোগীর চাপ এত থাকে যে, একা হিমশিম খেতে হয়। অন্যদিকে চিকিৎসা নিতে আসা শিক্ষার্থীরাও পড়েন ভোগান্তিতে। মেডিক্যাল সেন্টারে ওষুধের সীমাবদ্ধতার বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের খুব স্বল্প পরিমাণ টাকা বাজেট দেওয়া হয়। এই টাকা দিয়ে তিন/চার ধরনের ওষুধের বেশি কুলায় না।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণের পরিচালক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, আমরা মেডিক্যালের বিষয়টা নিয়ে ভাবছি। অন্তত প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য যেন শিক্ষার্থীরা ভালো মানের সেবা পায় সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। বাজেট বাড়ানোর বিষয়ে আমরা আলোচনা করব।

ইত্তেফাক/এমআর