শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বাণিজ্যিক সিনেমা প্রদর্শনীর প্রতিবাদ

রাবি প্রক্টরের উপস্থিতিতে আন্দোলকারীদের মারধর করলো ছাত্রলীগ

আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৮:৫২

ভারত-বাংলাদেশ যৌথ চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার ‘দহন’ সিনেমা প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) এক সাংবাদিকসহ প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ৭ নেতাকর্মীকে মারধর করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান এবং ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু উপস্থিতে মারধরের এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে বলে করেছে বলে অভিযোগ করেছে অন্দোলনকারীরা।

মারধরের শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে রিপোর্টাস ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আলী ইউনুস হৃদয়, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি এএম শাকিল, প্রচার সম্পাদক লিটন চন্দ্র, সদস্য শাকিলা খাতুন, ছাত্র ফেডারেশনের প্রচার সম্পাদক ঈসরাফিল আলম, সদস্য রাশেদ রিমন, আশরাফুল আলম, প্রগতিশীল ছাত্রজোটের সমন্বয়ক মহব্বত হোসেন মিলন প্রমুখ। এদের মধ্যে মিঠুনের হাত ভেঙ্গে গেছে।

অপরদিকে মারধরকারীরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান খান নাহিদ, সাবরুল জামিল সুষ্ময়, মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফেরদৌস মাহমুদ শ্রাবণ, শেখ সিয়ামসহ বহিরাগত বেশ কয়েকজন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে দহন সিনেমাটি প্রদর্শনীর কথা ছিল। প্রদর্শনী শুরু হওয়ার আগেই মিলনায়তনের দরজা বন্ধ করে অবস্থান নেন প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, পুলিশ ও শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি, সম্পাদকের উপস্থিতে ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক সাংবাদিকের গায়ে লাথি দেন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুষ্ময়।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক রঞ্জু হাসান বলেন, ‘প্রক্টরের উপস্থিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের মারধর করে।’

শাকিলা খাতুন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে বাণিজ্যিক সিনেমা প্রদর্শনী প্রতিবাদ জানালে প্রক্টরের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রুনুর নির্দেশেই আমাদের ওপর হামলা করা হয়। এছাড়াও প্রক্টর আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন। মারধরকারীদের ঠেকাতে গেলে তারা এক সাংবাদিককেও মেরেছে।’

দৈনিক খোলা কাগজের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হৃদয় বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতাদের মারধর করতে দেখে আমি তাদের আটকাতে যাই। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে দূরে থাকলেও সুস্ময় আমাকে লাথি মারে।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘সিনেমা প্রদর্শনী নিয়ে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা ঝামেলা তৈরি করছে বলে প্রক্টর আমাদের জানায়। পরে আমি এসে দেখি সেখানে বাকবিতণ্ডা চলছে। জোটের এক নেতা প্রক্টরের গায়ে ধাক্কা দিলে আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মীর সাথে তাদের ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়।’
 
মারধরের বিষয় জানতে চাইলে প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমি আন্দোলনকারীদের বুঝাতে চেয়েছি যে সিনেমাটি সামাজিক সিনেমা। আমি নিজেও সিনেমাটি দেখলাম। সিনেমাটি বেশ ভালো। যদি এটি দেখার মতো না হতো তাহলে আমরাই বন্ধ করে দিতাম। তবে আন্দোলনকারীরা বিষয়টি অতিরঞ্চিত করে। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হলে তাদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।’

ইত্তেফাক/বিএএফ