‘১৯৪৭ সালে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে দেশভাগের পর প্রত্যেকটি মিডিয়াই নিজেদের স্ব-স্ব মতাদর্শ লালন করতো। মুসলিম বাঙ্গালীদের মতাদর্শ লালন করার মতো কোন পত্রিকা স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে ছিলো না। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় বাঙ্গালী মতাদর্শ প্রচার করার মতোও পত্রিকা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ছিলো না। সেই সময় এই মতাদর্শ প্রচারের জন্য একটি পত্রিকার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া। সেই লক্ষেই ১৯৫৩ সালে পথ চলা শুরু হয় দৈনিক ইত্তেফাকের।’
সোমবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সেমিনার কক্ষে ‘সাংবাদিকতা উৎকর্ষে’ শীর্ষক কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে দৈনিক ইত্তেফাক এর সম্পাদক তাসমিমা হোসেন এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘ইত্তেফাকের ইতিহাস বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত সকল আন্দোলন সংগ্রামের সাক্ষী দৈনিক ইত্তেফাক। সকল আন্দোলনে বাঙ্গালীর প্রতিনিধিত্ব করেছে এই পত্রিকা।’
শিক্ষার্থীদের বাঙ্গালী ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা সাংবাদিকতা করতে চায় তাদের অনেক জানতে হবে। সাংবাদিকতার শিক্ষার্থীদের জন্য মানিক মিয়ার ইতিহাস জানা জরুরি। ইতিহাস জানার কোন বিকল্প নেই। আর একজন বাঙ্গালী হিসেবে আমাদেরকে অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে হবে।’
অনুষ্ঠানে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ‘সাংবাদিকতা একটি প্রতিবন্ধকতা পূর্ণ পেশা। যেখানে অনেক বাধা অতিক্রম করে টিকে থাকতে হয়। বাংলাদেশে বেশিরভাগ সাংবাদিক হত্যারই বিচার হয়নি। তারপরেও সাংবাদিকরা তাদের কাজ ঝুঁকি নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন। তার ওপর দিন দিন নতুন নতুন আইন পাশ হচ্ছে। যার মাধ্যমে সাংবাদিকরা তাদের স্বাধীন সাংবাদিকতা করতে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন।’
এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য দেন- এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ.ই মামুন, কথা সাহিত্যিক আন্দালিব রাশদী, পারভীন সুলতানা ঝুমা প্রমুখ।
এর আগে বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান অডিটোরিয়ামের সেমিনার রুমে এ কর্মশালার উদ্বোধন করা হয়। কর্মশালায় প্রায় বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। অতিথিরা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর প্রদানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
ইত্তেফাক/বিএএফ