শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ফোনালাপ ফাঁসে জাবিতে অস্থিরতা, পাল্টাপাল্টি শোডাউন-বিবৃতি

আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২২:০০

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে গোলাম রাব্বানী ও শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইনের ফোনালাপ ফাঁসের পর ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীলতা বেড়েই চলছে। ফোনালাপের তথ্য ‘মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও উপাচার্যপন্থী শিক্ষকেরা। অন্যদিকে শাখা ছাত্রলীগের একটি পক্ষ ক্যাম্পাসে শোডাউন দিয়েছে। 

ফাঁস হওয়া ফোনালাপে জানা যায়, উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগকে এক কোটি ভাগ করে দিয়েছেন। উপাচার্যের বাসায় টাকা বাঁটোয়ারার ওই বৈঠকে সাদ্দাম নিজেও উপস্থিত ছিলেন। 

তবে ফাঁস হওয়া ফোনালাপের তথ্যকে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে পৃথক বিবৃতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও উপাচার্যপন্থী আওয়ামী লীগের শিক্ষকদের একাংশের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ অফিস থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উপাচার্যের সঙ্গে টাকা ভাগের কোনো আলাপ হয়নি। তিনি কাউকেই অর্থ প্রদান করেননি। গোলাম রাব্বানী উপাচার্যকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এই ফোনালাপের গল্প তৈরি করেছেন। এ ধরনের পরিকল্পিত মিথ্যা গল্পের তীব্র দাবি জানাচ্ছে প্রশাসন।

বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সভাপতি-সম্পাদক স্বাক্ষরিত পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাব্বানীর সঙ্গে শাখা ছাত্রলীগ নেতার ফোনালাপ পরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রের অংশ। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে উপাচার্যকে পদত্যাগে বাধ্য করার ষড়যন্ত্রের অংশ এটি। আমরা মনে করি, স্বার্থন্বেষী গোষ্ঠী তাদের অন্যায় দাবি মেটাতে পারেননি বলেই তারা উপাচার্যের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।’

আরও পড়ুন : ইংল্যান্ড অসাধারণ দৃঢ়তা দেখিয়েছে: রুট

ফোনালাপের বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসাইন বলেন, ‘উপাচার্য ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে তিনি আমাদেরকে এই আর্থিক সহযোগিতা করেছিলেন। তিনি কোথা থেকে এ টাকা দিয়েছেন সেটা তিনি জানেন।’ 

তিনি দাবি করে বলেন, ‘টাকা লেনদেনের বিষয়টা যদি গুরুত্বপূর্ণ হয়, তবে টেন্ডার শিডিউল বিক্রির সময় ও টেন্ডার বক্স ওপেনের সময়ের উপাচার্যের ছেলের (প্রতীক তাজদিক হোসেন) ফোনকল রেকর্ড বের করলেই হয়। বিশেষ করে ৯ আগস্ট উপাচার্যের বাসায় আমাদের আলোচনার পরের এবং আগের আমার সাথে উপাচার্যের ছেলের কল রেকর্ড বের করেন। সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।’

এদিকে সোমবার দুপুরে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নেয়ামুল হোসেন তাজ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইনের নেতৃত্বে প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী ক্যাম্পাসে শোডাউন দেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তাজ বলেন, ‘সামনে ভর্তি পরীক্ষা। আর ক্যাম্পাসেও ছাত্রলীগের কোন কার্যক্রম নেই। এজন্য আমরা সবাই মিলে বের হয়েছিলাম।’

ফোনালাপের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেন, ‘উপাচার্যের বাসভবনের সেই মিটিংয়ে আমিও ছিলাম। প্রতিবার ঈদের যেমন সালামী দেওয়া হয়। সেদিনও সালামী দেওয়া হয়েছিলো। তবে ছাত্রলীগের নামে যেহেতু অর্থকেলেঙ্কারীর অভিযোগ উঠেছে। তাই এর তদন্ত করাই সবার জন্য মঙ্গলজনক হবে।’ 

ইত্তেফাক/কেআই