শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ঢাবিতে ছাত্রদলের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, সাংবাদিকসহ আহত ১৬

আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৫:৪৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা করেন। এতে ছাত্রদলের ১৩ জন আহত হয়। সোমবার সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বরে এই ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রদলের নব নির্বাচিত সভাপতি ফজলুর রহমান শ্যামলের নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বরে অবস্থান গ্রহণ করে। অবস্থান গ্রহণের কিছু সময় পর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাসের অনুসারীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে হামলায় ছাত্রদলের ১৩ জনেরও বেশি নেতাকর্মী আহত হয়। আহতরা হলেন- খোরশেদ আল সোহেল, কামরুল, ফিরোজ আলম, ফাহিম, সজল, নয়ন, শাহিন, অর্ণব, মাছুম, মাহবুব আলম, মশিউরসহ প্রমুখ।

ছাত্রলীগের এই হামলায় অংশগ্রহণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাসের অনুসারী আপেল মাহমুদ, জসিম উদ্দিন হল ছাত্রলীগের কর্মী মহসিন আলম তালুকদার, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগরে সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের অনুসারী সূর্যসেন হলের যুগ্ম-সম্পাদক সৈয়দ শরিফুল ইসলাম শপু, সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাইসুল ইসলাম, সূর্যসেন হল সংসদের ভিপি মারিয়াম জামান খান সোহান, জগন্নাথ হল সংসদের জিএস কাজল সরকার, জসীম উদ্দিন হল সংসদের জিএস ইমামুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক হাসান রাহাত।

সাংবাদিকদের উপর হামলা:
হামলার সময় পেশাগত দায়িত্বপালন কালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে তিন সাংবাদিককে মারধর ও মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়। ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা হলেন- স্টুডেন্ট জার্নালের ঢাবি প্রতিনিধি আনিছুর রহমান, বিজনেস বাংলাদেশের আফসার মুন্না ও প্রতিদিনের সংবাদের রাহাতুল ইসলাম রাফি।

ভুক্তভোগী আনিছুর রহমান জানান, সকাল সাড়ে ১২টার দিকে হাকিম চত্বরে ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সভাপতির নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে আসা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মারধর করা হচ্ছিল। এ সময় আমি পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলাম। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাকে এসে ঘিরে ধরে। এ সময় সনজিত আমার সামনে আসেন। আমি সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরও আমাকে তিনি ধাপ্পড় দিয়েছেন। তার নেতাকর্মীরাও আমাকে মারধর করেছেন। এ সময় আমার মোবাইল ফোনটিও নিয়ে যায় তারা। সুর্যসেন হলের ভিপি মারিয়াম জামান খান সোহান, সদস্য সাব্বির হাসান শোভন, সভাপতি প্রার্থী নাহিদ হাসান আমাকে মারধর করে।

আরো পড়ুন: ফতুল্লায় জঙ্গি আস্তানায় চলছে অভিযান, আটক ৩

আরেক ভুক্তভোগী আফসার মুন্না জানান, আমি ও আমর এক বন্ধু টিএসসিতে বসেছিলাম। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কয়েকজন ছাত্রদল কর্মীকে মারধর করছিলো। আমি এর ছবি উঠাতে গেলে ছাত্রলীগের এফ রহমান হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হোসাইন মাহমুদ আপেল, ঢাবি শাখার উপ-প্রচার সম্পাদক মহসিন তালুকদার, সুর্যসেন হল শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শপু। এ সময় প্রতিদিনের সংবাদের প্রতিনিধিকেও মারধর করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন, হামলার বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। আমি লাইব্রেরিতে ব্যক্তিগত কাজে যাই। পরে লাইব্রেরি থেকে বের হয়ে দেখি এ ঘটনা ঘটেছে। একটি সুষ্ঠু তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনার বিচার করবেন বলে জানান তিনি।

সাংবাদিকদের উপর হামলার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে না ঘটে সে বিষয়ে সতর্ক ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। হামলাকারীদের বিচার আজকের মধ্যে করবেন বলে জানান তিনি।

ইত্তেফাক/বিএএফ