বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

আইন অমান্য করেই রাজনীতিতে উপাচার্য-শিক্ষকরা

আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০১৯, ১৬:১৬

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ অনুযায়ী এর উপাচার্য, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সরাসরি রাজনীতিতে জড়ানোর নিয়ম নেই। তবে এ নিয়ম ভঙ্গ করেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষকসহ অন্যরা সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়েছেন।

উপাচার্য অধ্যাপক মীজানুর রহমান নিজেই যুবলীগের ১নং প্রেসিডিয়াম সদস্য। তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা ও মানবসম্পদ উপ-কমিটিরও সদস্য। আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলনে তিনি কাউন্সিলর হিসেবে অংশ নেন। তখন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন।

উপাচার্য মীজানুর রহমান বলেন, ‘আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করি না। আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী না। আমি এখানকার নিয়োগকর্তা। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইনে রাজনীতি করার নিয়ম আছে। আর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা রাজনীতিতে জড়িত তাদের সঙ্গে কথা বলেন।’

অথচ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ৮ নাম্বার ধারায় লেখা আছে, উপাচার্য, ডীন, বিভাগীয় প্রধান, রেজিষ্টার, প্রক্টর, পরিচালক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব থাকবেন। সে হিসেবে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা। এই আইনের ৪৪ নম্বর ধারার চার নম্বর উপধারায় উল্লেখ আছে- বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্য হতে পারবেন না। এ আইন লঙ্ঘন করেই উপাচার্য মীজানুর রহমান রাজনৈতিক পদ ধরে রেখেছেন।

আরো পড়ুন: ভোলায় পুলিশ-গ্রামবাসীর সংঘর্ষে নিহত ৪, গুলিবিদ্ধ ৯

এছাড়া ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শামসুল কবির রাহাত লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) সংসদীয় আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরমও উত্তোলন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক প্রিয়ব্রত পাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা ও মানবসম্পদ উপ-কমিটির সদস্য, ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ হালিম আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সদস্য।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী ওহিদুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আইনে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের রাজনীতিতে জড়ানোর বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আছে। তবে এটার কোনো কার্যকারিতা নেই। এ নিয়ে তাদের কাছে এ পর্যন্ত কোনো অভিযোগও আসেনি। এসময়, উপাচার্যের ব্যপারে জানতে চাইলে তিনি উপাচার্যকেই জিজ্ঞেস করতে বলেন।

এ বিষয়ে ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ ইত্তেফাককে বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার বিষয়টি জানা নেই। তবে এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে আইন দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইত্তেফাক/বিএএফ