বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নিশাতের শেষ কাজ মঞ্চে আজ

আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২০, ০৯:২৯

দেশ নাটকের নতুন প্রযোজনা ‘জলবাসর’। নাটকটি মঞ্চস্থ করার জন্য দলের সদস্যরা গত ৯ মাস দিনরাত এক করেছেন। কিন্তু এর আগেই না ফেরার দেশে চলে গেলেন অভিনেত্রী-নির্দেশক ইশরাত নিশাত। এ কারণে নির্ধারিত সময়ে নাটকটি মঞ্চস্থ না করার সিদ্ধান্ত নেয় দেশ নাটক। কিন্তু নাট্যাঙ্গনের গুণীজনদের পরামর্শে সর্বশেষ এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সংগঠনটি। ‘জলবাসর’ নাটকের নির্দেশক মাসুম রেজা জানান, ২৪ ও ২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে সন্ধ্যা ৭টায় মঞ্চস্থ হবে নাটকটি।

গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় নাট্যশালার গেট দিয়ে প্রবেশ করতেই দেখা মিললো নাটকটির প্রচারণার দৃশ্য। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, নাট্যাঙ্গনের ‘বিদ্রোহী কণ্ঠের’ প্রয়াণে কারো মন ভালো নেই এখনো। তবে তারা এই শোককে শক্তিতে পরিণত করে তা কাটিয়ে উঠতে চান। নিশাতের শেষ কাজটাকে ভালোভাবে করার প্রচেষ্টা দেখা গেল সবার মধ্যেই।

‘জলবাসর’ নাটকে মোট ১৭টি চরিত্র রয়েছে। এসব চরিত্র রূপায়ণ করবেন—নাজনীন চুমকি, বন্যা মির্জা, সুষমা সরকার, ফিরোজ আলম, কামাল আহমেদ, তিথিসহ অনেকে। নাটকটির কারিগরি দিকও অনেক বড়। মঞ্চ পরিকল্পনা, আলোক পরিকল্পনা, কস্টিউম ডিজাইন সব দলের ছেলেমেয়েরা করেছেন। কস্টিউম ডিজাইন করছেন বন্যা মির্জা, আলোক পরিকল্পনা করছেন টিটু, সেট ডিজাইন করছেন মুকুল, প্রপস ডিজাইন করছেন আরিফ হক ও পোস্টার ডিজাইন করছেন আফজাল হোসেন।

নাটকের গল্প তিন বোনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠেছে। দর্শী, দোপাটি, দাওয়া নামে এই তিন বোন রূপার গহনা তৈরি করে। যে উঠোনে বসে তারা গহনা তৈরি করে সেখানে একটি গাছ আছে। এই গাছ অনেক আগে তাদের পূর্বপুরুষ রোপণ করেছিলেন। গাছটি একদল মানুষ চুরি করে কেটে নিয়ে যেতে আসে। এ সময় গাছের ওপর বজ্রপাত হয়। গাছটি মারা যায় কিন্তু কোনো ছায়া থাকে না। গাছটিতে বেশকিছু আখ্যান লেখা থাকে, যা কেউ পড়তে পারে না। অন্যদিকে আরেক ব্যক্তির ওপর বজ্রপাত হয়। সেও ছায়াহীন হয়ে যায়। তারও শরীরের কোনো ছায়া থাকে না। কিন্তু তার ছায়া ঘুরতে ঘুরতে এই বাড়িতে আসে। লোকটিও নিজের ছায়া খুঁজতে এসে বৃক্ষটিতে লেখা আখ্যান পাঠ করে। এই আখ্যানে তিন বোনের গল্প লেখা থাকে। লোকটি আখ্যানে যা পাঠ করে তাই সমগ্র নাটকে ঘটতে থাকে। মহাভারতে ব্যাসদেব যা লিখেছেন তা ঘটতে থাকে।

মাসুম রেজা বলেন, ‘আমার লেখা সুরগাঁও, নিত্যপুরাণ নাটকের দিকে দৃষ্টি দিলে দেখতে পাবেন এগুলো সময় নিরপেক্ষ। জলবাসর নাটকও তাই। বর্তমানে বিশ্বচরাচরের পরিবেশ ও প্রকৃতি এই নাটকের বিষয়বস্তু। প্রকৃতিকে আমরা ধ্বংস করে দিচ্ছি। কিন্তু প্রকৃতি হচ্ছে মানুষের প্রকৃত ছায়া। এখন প্রকৃতি যদি ধ্বংস করি, তবে ছায়াকেই ধ্বংস করা হবে। এজন্য এই নাটকের গল্পে আমি একটি মানুষ তৈরি করেছি যার কোনো ছায়া নেই। সেই মানুষটিই প্রকৃতির গল্প বলবে।’

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন