পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছেন চিত্রনায়ক কাজী মারুফ। সম্প্রতি ‘জীবন যেখানে যেমন’ নামের এক অনলাইন আড্ডাতে নিজের চলচ্চিত্র ভাবনাসহ সাম্প্রতিক কাজের কথা প্রকাশ করলেন। মারুফ বলেন, ‘আমেরিকা প্রবাসীদের বাস্তবতা নিয়ে ছবিটির গল্প। এখানকার উবার ড্রাইভারদের জীবনের গল্প থাকবে সিনেমাটিতে। আর এটি যুক্তরাষ্ট্রের মোশন পিকচার্সের অন্তর্ভুক্ত হয়েই ছবিটি রিলিজ হবে।’
উল্লেখ্য, এরই ভেতরে নিউইয়র্কে নিজস্ব এডিট প্যানেল থেকে শুরু করে শুটিং হাউজ, সবকিছুই গড়ে তুলেছেন তিনি। মারুফ বলেন, ‘আমার শরীরে ফিল্মের রক্ত। এই চলচ্চিত্রের ভেতর দিয়েই আমার বেড়ে ওঠা। তাই এর বাইরে আমি কখনোই ভাবতে পারি না। ভাবতে চাইও না।’
দেশবরেণ্য চিত্রপরিচালক কাজী হায়াত্ পুত্র কাজী মারুফ এদেশীয় চলচ্চিত্রে একাধিক সফল ছবি উপহার দিয়েছেন। হঠাত্ করেই দেশ ছেড়ে প্রবাস জীবন বেছে নিলেন কেন এমন প্রশ্নে কাজী মারুফ বলেন, ‘আমি তো ইচ্ছে করে আসিনি। দেশে আমার কিছু করার ছিল না। নানানভাবেই আমাকে আটকে দেওয়া হচ্ছিল। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির নোংরা পলিটিক্স তো আমাকে আমার পরিবার শেখায়নি। কাজ ছিল না। বেকার হয়ে যাচ্ছিলাম। কারণ ফিল্ম ছাড়া তো কোনোকিছু করি না তখন। এর ওপরেই আমার সমস্ত জীবন-জীবিকা।’
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা কাজী মারুফ তার নতুন পরিকল্পনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমেরিকায় পরিবার নিয়ে আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি। তবে ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর খবরগুলো পীড়া দেয়। যেমন যুক্তরাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তের শুরুর দিকে দেশে খবর ছড়িয়ে পড়ল যে, আমার পরিবারের সবাই করোনা আক্রান্ত। অথচ ঘটনা তেমন কিছুই না। এ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হলো। আমার মনে হয় এই বহুল তথ্য প্রবাহের এ সময়ে খুব প্রয়োজন সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে খবরটি প্রকাশ করা।’
দেশীয় চলচ্চিত্রের একাধিক সংগঠনের নানা তর্ক-বিতর্ক প্রসঙ্গে কাজী মারুফ বলেন, ‘দেখুন, চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বড় সিন্ডিকেটের নাম হলো দর্শক। দর্শক যদি আপনাকে গ্রহণ করে তাহলে সবাই বয়কট করেও কিছু হবে না। আবার দর্শকরা যদি বয়কট করে সব সংগঠন মিলেও কিছু কেউ করতে পারবে না। আর সহকর্মীদের জন্য পারস্পরিক হওয়ার যে চর্চা, তাদের পাশে দাঁড়ানো, এগুলো তো আপনি মানুষ হিসেবেই করবেন। তার জন্য সমিতির প্রয়োজন নেই। সমিতি একটি মিলন কেন্দ্র মাত্র। এটাকে এত বড়ভাবে ভাবার কিছু নেই।’
দেশকে কতটা মিস করেন? এ প্রশ্নে মারুফ বলেন, ‘অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করেন। আমেরিকায় তো খুব ভালো আছেন। আমি বলি না, আমার ঐ দেশের ধুলোবালিই ভালো লাগে। এদেশে যতই আমি আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ থাকি না কেন, এদেশ আমার না।’
ইত্তেফাক/বিএএফ