শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

আশার মৃত্যু: আড়াই ঘণ্টার তথ্যে গড়মিল

আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০২১, ০১:০৩

রাজধানীর টেকনিক্যাল মোড়ে অভিনেত্রী আশা চৌধুরীর মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তাকে বহনকারী মোটরবাইক চালক শামীম আহম্মেদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

আশা চৌধুরী নিহতের ঘটনায় তার বাবা আবুল কালাম বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে দারুস সালাম থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় বাইক চালক শামীম আহমেদসহ অজ্ঞাত আরো চারজনকে আসামি করা হয়েছে। সড়ক আইনের ১০৫ ধারায় দায়ের করা এই মামলায় পুলিশ শামীম আহমেদকে গ্রেফতার দেখিয়েছে।

সোমবার রাত ২টার দিকে টেকনিক্যাল মোড়ে ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন আশা চৌধুরী। তিনি তার পূর্ব পরিচিত শামীম আহমেদের বাইকে করে রূপনগরের বাসায় ফিরছিলেন। 

সূত্র জানায়, আশাকে নিয়ে বাসায় ফেরার পথে আড়াই ঘণ্টার তথ্যে গড়মিল থাকায় মোটরবাইকের চালক শামীম আহমেদকে সন্দেহ করা হচ্ছে। এজন্যই তাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। 

মৃত্যুর আগে গাজীপুরের বোর্ড বাজার এলাকা থেকে বাসায় ফেরার কথা প্রথমে তার পরিবারকে জানান অভিনেত্রী আশা। এরপর বনানী এলাকা থেকে বাসার দিকে রওনা হয়েছিলেন বলে ৪ জানুয়ারি রাত ১১টার দিকে আশা তার মাকে ফোন দিয়ে জানান। 

তিনি তার মাকে আরো বলেছিলেন, বনানী থেকে বাসায় আসতে ১১টা বাজতে পারে। বনানী থেকে কালশী রোড হয়ে মিরপুর রূপনগর আবাসিক এলাকার বাসায় ফেরার কথা ছিল আশার। কিন্তু বাসায় আসতে দেরি হলেও তিনি তার পরিবারকে আর ফোন করেননি। 

এরপর রাত প্রায় দুইটার দিকে আশাকে বহনকরা মোটরবাইকের চালক শামীম আহমেদ আশার মাকে ফোন দেন। তিনি তাদের টেকনিক্যাল মোড়ে যেতে বলেন। 

এরপর শামীম ফোন কেটে দিয়ে কিছুক্ষণ পর পুনরায় ফোন দিয়ে বলেন, ‘আন্টি আশা আর নেই, মারা গেছে।’ এসব তথ্য জানানোর সময় কথা বলতে বলতেই আশার বাবা আবুল কালাম কেঁদে ফেলেন। এরপর ফোনটি তার শ্যালক মো. দুলাল হোসেনকে ধরিয়ে দেন।

আশা চৌধুরীর মামা দুলাল হোসেন বলেন, মোটরবাইকের চালক শামীম আহমেদ থানায় পুলিশের সামনে তিন রকম কথা বলেছেন। তাদের বাসায় ফেরার কথা ছিল কালশী রোড হয়ে। কিন্তু টেকনিক্যাল মোড়ে তিনি কীভাবে গেলেন? 

চালক শামীম জানিয়েছেন, তিনি পথ ভুলে টেকনিক্যাল মোড়ে গিয়েছিলেন।

দুলাল হোসেন বলেন, তার ভাগনি আশার ঢাকার প্রায় সব রাস্তাই চেনা। তাই সে রাস্তা ভুলে আসতে পারে না। 

বাইক চালক শামীম পুলিশের সামনে পুনরায় বলেছেন, আশা রোড পার হতে গিয়ে গাড়ি চাপায় মারা গেছেন। 

কিন্তু সেখানকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, মোটরবাইকে থাকা অবস্থায় ট্রাকের ধাক্কায় আশা রাস্তায় পড়ে যান। এসময় তার মাথার ওপর দিয়ে ট্রাকের চাকা চলে যায়। 

আশা চৌধুরীর মামা অভিযোগ করেন, শামীমই পরিকল্পিতভাবে নেশা জাতীয় কিছু খাইয়ে ছিল আশাকে। আর যদি আশা সুস্থ থাকতো তাহলে সে মোটরবাইক চালক শামীমকে ধরে বসত। শুধু তাই নয়, গাড়ি চাপায় আশা রাস্তায় ছিটকে পড়ার পরও আশাকে একবারও ধরতে যায়নি। আর শামীম আড়াই ঘণ্টা কীভাবে কোন কোন রাস্তায় ঘুরেছেন, তা সঠিকভাবে বলতে না পারায় তাকে সন্দেহ করে মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে। 

এ ব্যাপারে দারুসসালাম থানার ওসি তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, এ ঘটনায় এজাহারভুক্ত আসামি শামীম আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ইত্তেফাক/জেডএইচ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন