শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ছায়ানটে মিতা হককে অশ্রুসিক্ত বিদায়

আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২১, ১৯:২৫

বাবা ও মায়ের কবরের মাঝখানে স্থান পেলেন বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী ও শুদ্ধ সংগীত চর্চার অন্যতম পুরোধা মিতা হক। আজ (১১ এপ্রিল) বেলা দুইটায় কেরানীগঞ্জে পারিবারিক কবরস্থানে শিল্পীকে দাফন করা হয়েছে। শেষ বিদায়ের আগে বেলা ১১টার দিকে মিতা হকের দীর্ঘদিনের কর্মস্থল প্রাণের সংগঠন ছায়ানটে নেওয়া হয়। প্রিয় শিল্পীকে শ্রদ্ধা জানাতে আসা বন্ধু, সহকর্মী, স্বজনদের হাতে ছিল ফুল, চোখে জল। ফুল আর চোখের জলেই বিদায় জানালেন প্রিয় শিল্পীকে।

সুরতীর্থ নামে একটি সংগীত প্রশিক্ষণ দল ছিল মিতা হকের। সেখানে তিনি পরিচালক ও প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন। কিন্তু ছায়ানটের সঙ্গে ছিল তার নাড়ির টান। সংগঠনটির ছায়ায় তার বিকাশ ও বেড়ে ওঠা। প্রতিষ্ঠানটির রবীন্দ্রসংগীত বিভাগের প্রধান ছিলেন তিনি। দায়িত্বপালন করেছেন রবীন্দ্রসংগীত সম্মেলন পরিষদের সহ-সভাপতি হিসেবে।

আজ আর প্রিয় সংগঠনের ভেতরে নেওয়া হয়নি মিতা হককে। ছায়ানট ভবনের উঠানে লাশবাহী শীতল ভ্যানের ভেতরেই ছিলেন তিনি। বাইরে থেকে ফুল দিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান শিল্পী–স্বজনেরা। মিতা হককে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজির হয়েছিলেন শিল্পীদের অনেকেই। অভিনেতা ও সাংসদ আসাদুজ্জামান নূর, শিল্পী বাপ্পা মজুমদার, লাইসা আহমদ লিসা, বুলবুল ইসলাম প্রমুখ।

রবিবার (১১ এপ্রিল) ভোর ৬টা ২০ মিনিটে একুশে পদকপ্রাপ্ত এই শিল্পী না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। মাত্র ৫৮ বছর বয়সে তার এই অকাল প্রস্থানে বিষণ্নতার সুর বেজেছে সংগীত ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে।

১৯৬২ সালে জন্মগ্রহণ করেন মিতা হক। তিনি প্রথমে তার চাচা ওয়াহিদুল হক এবং পরে ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খান ও সনজীদা খাতুনের কাছে গান শেখেন। ১৯৭৬ সাল থেকে তিনি তবলাবাদক মোহাম্মদ হোসেন খানের কাছে গান শেখা শুরু করেন। ১৯৭৭ সাল থেকে নিয়মিত তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারে সংগীত পরিবেশনা করতেন।

২০২০ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন মিতা হক। তারও আগে ২০১৬ সালে শিল্পকলা পদক লাভ করেন। এরপর কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মিতা হককে বাংলা একাডেমির রবীন্দ্র পুরস্কার দেওয়া হয়। তিনি সুরতীর্থ নামে সংগীতশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতেন। এছাড়া মিতা ছায়ানটের রবীন্দ্রসংগীত বিভাগের প্রধান ছিলেন। তিনি রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের সহ-সভাপতিও ছিলেন।

সংগীতশিল্পী মিতা হক প্রয়াত অভিনেতা খালেদ খানের স্ত্রী। মেয়ে ফারহিন খান জয়িতাও রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী।

ইত্তেফাক/বিএএফ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন