বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

আপডেট : ১৭ মে ২০২১, ২০:৩০

বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়াধীন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। আজ এই প্রতিষ্ঠানটির ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। দিবসটি উপলক্ষে চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব, সকল সুহৃদ ও শুভানুধ্যায়ী, সকল চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিচালক, অভিনেতা, অভিনেত্রী ও কলাকুশলীদের বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভে কর্তৃপক্ষ।

সোমবার (১৭ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৯৭৫ সালে চলচ্চিত্র সংসদের উদ্যোগে ফিল্ম আর্কাইভের রূপরেখা প্রণয়ন করা হয় এবং তৎকালীন তথ্য ও বেতার মন্ত্রণালয়ে তা পেশ করা হয়। ১৯৭৫ সালের মর্মান্তিক ও বিয়োগান্তক ঘটনার পর এ প্রক্রিয়া থমকে যায়। পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালের ১৭ মে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘ফিল্ম ইন্সটিটিউট ও আর্কাইভ’ নামে এ প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয় এবং ১৯৮৪ সালে ‘বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ’ নামকরণ করা হয়।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে পর্যায়ক্রমে ধানমন্ডি, কলেজগেট, গণভবন ও সর্বশেষ শাহবাগে এর কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত আগ্রহে ঢাকার আগারগাঁও এ প্রায় ৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় বিশ্বমানের অত্যাধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন ফিল্ম আর্কাইভ ভবন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালের ০১ নভেম্বর  নবনির্মিত বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ ভবন উদ্বোধন করেন।

বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের সংরক্ষণাগারে বিশ্বের প্রথম চলচ্চিত্র ‘দি লুমিয়র ব্রার্দাস (১৮৯৫)’ সংরক্ষিত আছে। এছাড়াও সংরক্ষিত আছে পূর্ব বাংলার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সবাক চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ (১৯৫৬)’, কাজী নজরুল ইসলাম অভিনীত  ‘ধ্রুব (১৯৩৪)’, প্রমথেস বড়ুয়ার ‘দেবদাস (১৯৩৫)’, ‘আসিয়া (১৯৬০)’,  রাশিয়ার ‘ব্যাটেলশিপ পটেমকিন (১৯২৫)’, ‘মাদার (১৯২৬)’, ‘অপুর সংসার (১৯৫৯)’, ‘জীবন থেকে নেয়া (১৯৭০)’, ‘নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা (১৯৬৭)’ ইত্যাদি।

এছাড়াও বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জীবন ও কর্মের সকল ভিজ্যুয়াল দলিলাদির গর্বিত সংগ্রাহক। বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভে সংরক্ষিত সকল  চলচ্চিত্রকে  আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ডিজিটাল ফরম্যাটে রূপান্তর ও রেস্টোরেশন করে সংরক্ষণ করা হয়। ফিল্ম ডিজিটাইজেশন ও রেস্টোরেশনের জন্য কারিগরি শাখায় রিয়েল টাইম ফিল্ম স্ক্যানার, ফিল্ম রেস্টোরেশন ইউনিট, কালার গ্রেডিং ইউনিট ও ভিডিও এডিটিং প্যানেল রয়েছে।

বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভে রয়েছে ৫০০ আসন বিশিষ্ট ১টি অত্যাধুনিক মাল্টিপারপাস অডিটোরিয়াম, ৩০০ আসন বিশিষ্ট ১টি প্রজেকশন হল ও ১২০ আসন বিশিষ্ট ১টি সেমিনার হল।

বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ ২০০৯-২০১০ অর্থবছর থেকে নিয়মিতভাবে চলচ্চিত্র বিষয়ে গবেষণা ও প্রকাশনা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এ পর্যন্ত মোট ৭০টি গবেষণাকর্ম সাফল্যের সাথে সম্পন্ন হয়েছে। বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ ২০০৯-২০১০ অর্থবছর থেকে নিয়মিতভাবে ‘বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ জার্নাল’ নামক একটি চলচ্চিত্র বিষয়ক জার্নাল প্রকাশ করে আসছে। ইতোমধ্যে এ জার্নালের ১৭টি সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে। একই সাথে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ এ পর্যন্ত চলচ্চিত্র বিষয়ক  ৮২টি গ্রন্থ প্রকাশ করেছে। 

ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভে দেশের প্রথম ফিল্ম মিউজিয়াম স্থাপন করা হয়েছে , যা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ ১৯৮০ সালে আন্তর্জাতিক ফেডারেশন অব ফিল্ম আর্কাইভস (FIAF) এর সদস্য পদ লাভ করে ও ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক অ্যাসোসিয়েশন অব অডিও ভিজুয়াল আর্কাইভ (IASA) এর সদস্য পদ লাভ করে।

ইত্তেফাক/বিএএফ
 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন