এদেশের একাধিক রিয়েলিটি শো ইজাজ খান স্বপন-এর নির্মাণে হয়েছে। একইসঙ্গে তিনি ইভেন্টের নান্দনিকতা নিয়েও কাজ করেছেন। এদেশে একাধিক মিউজিক ভিডিওর নির্মাতা তিনি। চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ড ইভেন্টটি পরিচালনা করে আসছেন দীর্ঘদিন। এবারের আয়োজনটি প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কথা বললেন এই আয়োজনসহ এ সময়ের ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে।
চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডসহ অন্যান্য কাজের ব্যস্ততা নিয়ে জানতে চাই—
এখন আমার সকল ব্যস্ততা মূলত চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানটি ঘিরেই। এটি আগামী নভেম্বরে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে আগামীকাল (আজ) সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করছি আমরা।
চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানটি দেশের বাইরে আয়োজন করছেন। হটাৎ কেন এমন উদ্যোগ?
এবারই কিন্তু প্রথমবার দেশের বাইরে আয়োজন করছি না। এর আগেও ভারত, দোহাতে আয়োজন করেছি। তবে এবারের আয়োজনের ভিন্ন একটি কারণ রয়েছে। সেটা হলো ‘স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশের গান’—এই শ্লোগানকে সামনে রেখে আয়োজনটি করছি। এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বিগত ৫০ বছরে সংগীতে বিশেষ অবদান রাখা ৫০ গুণীজনের নাম ঘোষণা করা হবে। সে সময় অনুষ্ঠানে যারা উপস্থিত থাকবেন তাদের মঞ্চেই সম্মাননা প্রদান করা হবে এবং যারা উপস্থিত থাকতে পারবেন না তাদের দেশে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করে সম্মান জানানো হবে।
তাহলে কী অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক শিল্পীদের দেখা মিলবে?
না, শুধুমাত্র মাত্র সেখানে আমাদের যে বাঙালি শিল্পীরা রয়েছেন তাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। আসলে একটা তো বাণিজ্যিক স্বার্থে আয়োজন করছি না। বাংলা গান ও বাংলাদেশের গুণী শিল্পীদের আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আরো পরিচিত করতে চাই আমরা।
আপনার ক্ষুদে গানরাজ রিয়েলিটি শো অনেক জনপ্রিয়। এই অনুষ্ঠানটি নিয়ে পরবর্তী পরিকল্পনা কী করছেন?
বিভিন্ন স্পন্সরের সঙ্গে এ নিয়ে কথা চলছে। আশা করছি আগামী বছরই ক্ষুদে গানরাজ, সেরাকণ্ঠ বা নাচের কোনো অনুষ্ঠানের ঘোষণা আমরা দিতে পারবো।
ক্ষুদে গানরাজ, সেরাকণ্ঠসহ অন্যান্য প্লাটফর্ম থেকে প্রতিষ্ঠিত অনেককেই পরবর্তীতে আপনাদের শ্রদ্ধার জায়গায় রাখতে ভুলে যায়। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
এটা আমার সঙ্গে কখনো ঘটেনি। আমরা তো ওদের পথ দেখিয়ে দিই। তারা সেই আদর্শ মেনে চলবে এই প্রত্যাশা থাকে। তবে এমন কিছু যদি তারা করে থাকে, তবে সেটা দুঃখজনক। কারণ তেমন কোনো শিক্ষা তাদের আমরা দিইনি।
রিয়েলিটি শো শেষ হওয়ার পরও অনেককে চ্যানেলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থাকতে হয়, আবার অনেক চ্যানেল ছেড়ে দিলেও তাদের নিয়ে কোনো আয়োজন রাখে না। এতে তারা সংগীত থেকে দূরে সরে যাচ্ছে মনে করছেন না?
শো শেষের পর তাদের আমরা ছেড়ে দিলেও সবসময়ই চেষ্টা করি তাদের নিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজন করার। তবে অনেকেই পড়াশোনার কারণে সংগীত থেকে দূরে সরে যান। আবার অনেকেই সংগীতকে পেশা হিসেবে নিয়ে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছেন।
আমাদের দেশে রিয়েলিটি শো তুলনামূলক কম হওয়ার কারণ কী বলে মনে করেন? এটা কী বাণিজ্যিক স্বার্থে?
কম হয় না, কিন্তু করোনার কারণে একটু কম হচ্ছে। এটা সময় সাপেক্ষ অনুষ্ঠান বলে এই সময়ে এ ধরনের আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না।
‘দ্য পিয়ানো লাউঞ্জ’ নামে ব্যতিক্রমী একটি অনুষ্ঠান নির্মাণ করছেন। এটা কী অনুষ্ঠানের নির্ধারিত ফর্মেট ভাঙার লক্ষ্যে?
না, বিষয়টি আসলে তেমন না। এই অনুষ্ঠানটি আমাদের এমডি ফরিদুর রেজা সাগরের পরিকল্পনায় নির্মিত হয়েছে। এমন অনুষ্ঠানে স্পন্সর পাওয়া দুষ্কর, তাই তিনি নিজ দায়িত্বে অনুষ্ঠানটি শুরু করেছেন। পরে যদিও স্পন্সর আমরা পেয়েছি। এছাড়া মানাম আহমেদ অনেক পরিশ্রম করেছেন অনুষ্ঠানটির জন্য। সব মিলিয়ে দারুণ একটি অনুষ্ঠান হয়েছে ‘দ্য পিয়ানো লাউঞ্জ’।
চ্যানেলগুলোর একই ফর্মেটের অনুষ্ঠান নির্মাণ ও প্রচারের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে সিনিয়র শিল্পীদের অবমূল্যায়নের বিষয়ে কী মন্তব্য করবেন?
আসলে আমাদের শিল্পী সংকটের কারণে অনুষ্ঠানে পরিবর্তন আনা সম্ভব হয় না। আর আমরা কিন্তু বিশেষ দিবস থেকে শুরু করে সব অনুষ্ঠানেই সিনিয়র-জুনিয়র শিল্পীর সমন্বয় করে থাকি।
ইত্তেফাক/জেডএইচডি