বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ দেশের তারকারা

আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২১, ১৫:০০

সম্প্রতি রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েক সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এমনকি মন্দিরে পর্যন্ত হামলা চালানো হচ্ছে। সর্বশেষ রবিবার (১৭ অক্টোবর) রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দুদের অন্তত ২০টি বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

এসব হামলার প্রতিবাদে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। সেই কাতাকে যুক্ত হয়েছেন শিল্প-সংস্কৃতি-চলচ্চিত্র অঙ্গনের তারকারা।

সুবর্ণা মুস্তাফা

গত কয়েকদিন ধরে এক বিশ্রী অনুভূতির মধ্যে বসবাস করছি। গ্লানি, দুঃখ, ক্ষোভ সবকিছু মিলেমিশে একাকার। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে যেন কালো একটা পর্দা পড়ে গেল। ত্রিশ লক্ষ শহীদ আর তিন লক্ষ নারীর সর্বোচ্চ ত্যাগকে অসম্মানিত হতে দেখলাম। বঙ্গবন্ধুর ধর্মনিরপেক্ষ সোনার বাংলাকে ধর্মের ধুয়াধারীরা কলুসিত করতে উদগ্রীব। কিন্তু আর না! নতুন করে যুদ্ধ শুরু করতে হবে। দেশকে এই কুচক্রীদের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে। যারা ষড়যন্ত্র করে আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চাইছে, দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে, তাদেরকে বলছি- ‘বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এবার ঘুঘু তোমার বধিব পরাণ’। বাংলাদেশ এখন পুরোটাই ডিজিটাল। তোমরা সবাই চিহ্নিত, তোমাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে, আইনের শাসন দিয়েই তোমরা শাস্তি পাবে। সহনশীল হবার দিন শেষ। নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর সৈনিক উল্লেখ করে স্ট্যাটাসের শেষ অংশে তিনি লিখেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমরা আপনার সৈনিক, আপনি আদেশ করেন; ৭১-এ পারিনি, ২০২১-এ দেশের জন্য প্রাণ দিতেও প্রস্তুত।’

চঞ্চল চৌধুরী

রংপুর নয়, পুড়ছে স্বদেশ, পুড়ছে মাতৃভূমি। আজ পুড়ছে অসহায় কেউ, কাল পুড়বে তুমি।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

এখন আমরা কী করতে পারি? ঘটনা যা যা ঘটেছে সেটা ঠিকঠাক তদন্ত করে সবার সামনে তুলে ধরা। দ্রুততার সাথে এই হামলার ঘটনাগুলার সাথে যারা যারা জড়িত তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা। আগামীতে যেনো এইরকম কিছু না ঘটে তার জন্য যা যা ব্যবস্থা নেয়ার সেটা নেয়া। আলেম সম্প্রদায়ের উচিৎ এই ঘটনার নিন্দা করে বয়ান দেয়া। তবে সবচেয়ে বেশি দরকার যেটা, সেটা হচ্ছে, প্রত্যেকেই যার যার জায়গা থেকে এই ঘটনার নিন্দা করা। হিন্দু বন্ধু এবং প্রতিবেশীকে জানানো, তুমি একা নও! এখন তাকে একা বোধ না করতে দেয়াই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কাজ! এই সময় এক জগতবিধ্বংসী ক্ষোভ-অভিমান চেপে বসে। তার হাতটা চেপে ধরে বলি চলেন, ইউ আর নট অ্যালোন।’

জয়া আহসান

এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না। এই জল্লাদের উল্লাসমঞ্চ আমার দেশ না। এই বিস্তীর্ণ শ্মসান আমার দেশ না। এই রক্তস্নাত কসাইখানা আমার দেশ না।

দীপা খন্দকার

এই দেশে জন্মগ্রহণকারী প্রতিটি নাগরিকের এই দেশে বসবাস করার অধিকার আছে। সে অধিকার কোনো অমানুষ কেড়ে নিতে পারে না। যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। ধিক্কার জানাই অমানুষদের।’

বিদ্যা সিনহা মিম

কোনো ধর্মই কখনো প্রতিহিংসা শেখায় না। তাই ধর্মীয় বিশ্বাসের নামে সকল সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি। আরও একটা কথা, দেশটা যদি আমাদের সকলেরই হয়, তাহলে এখানে ‘সংখ্যালঘু’ বলে কোন শব্দ থাকা উচিত না। আর যদি সংখ্যাতেই কথা বলতে হয়, তাহলে পৃথিবীতে শুধুমাত্র ভালো মানুষেরাই ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ’ হোক।

আশনা হাবিব ভাবনা

পোড়ার গন্ধ পাই। দম বন্ধ লাগে। আর কত পুড়তে হবে মানুষকে? আমরা কি মানুষ?

বাপ্পী চৌধুরী

অথচ আমাদের রক্তের রঙ একই।

সিয়াম আহমেদ

আমাদের বন্ধুরা ঈদের দিন বাসায় আসে। আমাদের সাথেই আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়। বিপদে পড়লে সবার সাথে তারাও ছুটে আসে। একবারের জন্য মনে হয় নাই ওরা হিন্দু না মুসলমান। ২০২১ সালে এসে আমরা কী প্রমাণ করতে চাইছি? আমরা তো এমন দেখিনি! আমাদের সাম্প্রদায়িকতা তো এমন না! আমার দেশ জ্বলছে, আমাদের দেশ জ্বলছে।’

ইত্তেফাক/বিএএফ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন