শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

‘দর্শকরা ছবি দেখছেন, কিন্তু প্রযোজকরা টাকা পাচ্ছেন না’

আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২১, ০৫:০৩

ক্যারিয়ারে অসংখ্য ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন দেশবরেণ্য নির্মাতা কাজী হায়াৎ। যার স্বীকৃতিস্বরূপ একাধিকবার জয় করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ নানা আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও সম্মাননা। গুণী এই নির্মাতা নিজের নতুন চলচ্চিত্রসহ ইন্ডাস্ট্রির নানা বিষয় নিয়ে কথা বললেন ইত্তেফাকের সঙ্গে।

‘জয় বাংলা’ ছবিটির কাজ কতটুকু সম্পন্ন হয়েছে?

ছবিটির প্রথম লটের শুটিং সম্পন্ন হয়েছে। এখন ডাবিং চলছে। দ্বিতীয় ধাপের টাকা পেলে বাকি অংশের শুটিং শুরু করব।

সিনেমা আর নির্মাণ করবো না -কাজী হায়াৎ

ছবিটির গল্পের প্রেক্ষাপট ও এতে বিশেষ কী থাকছে?

প্রথমত, ‘জয় বাংলা’ মুক্তিযুদ্ধের ছবি। সরকারি অনুদানের ছবি। এর গল্প আবর্তিত হয়েছে ১৯৬৮ সালের ৬ ডিসেম্বর থেকে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ছবিটির গল্পে মোট ৩টি রবীন্দ্রসংগীত ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া আমি আগেই বলেছিলাম এই ছবিতে কেউ মেকআপ করতে পারবে না। নায়ক বাপ্পী চৌধুরী ও নায়িকা জাহারা মিতু এখানে মেকআপ ছাড়াই শুটিং করছেন। কাজ শেষ হলে বোঝা যাবে কেমন হলো।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে ইতিহাস নির্ভর চলচ্চিত্র নির্মাণে কেমন প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়?

না, তেমন কোনো প্রতিবন্ধকতা আছে বলে আমার মনে হয় না। আসলে ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। এ ধরনের চলচ্চিত্রে ব্যবসায়িক সাফল্য হয়তো নেই। কিন্তু আমি মনে করি ইতিহাস নির্ভর চলচ্চিত্র আরো বেশি নির্মাণ করা দরকার।

কাজী হায়াৎ হাসপাতাল ছেড়েছেন, দেশে ফিরবেন সোমবার

ইদানিং নির্মাতারা গল্পনির্ভর কাজের দিকে মনোযোগী হচ্ছেন। এটাকে দর্শক চাহিদা নাকি চলচ্চিত্রের ধারাবদল বলবেন?

দর্শক পরিবর্তনের কারণে চলচ্চিত্রের ধারাও কিছুটা বদলে যাচ্ছে। আগের প্রান্তিক দর্শকরা এখন ছবি দেখেন না। এখন যারা মোবাইল বা অ্যাপসে নতুন ছবি দেখছেন তারা কিন্তু বিত্তবান এবং শিক্ষিত। তাদের রুচির ধরনও আলাদা। তাই নির্মাতারাও তাদের রুচির বিষয়টি মাথায় রেখে নির্মাণ করার চেষ্টা করছেন।

হলের পাশাপাশি ওটিটিতে চলচ্চিত্র মুক্তির চর্চা সংকট নিরসনে কতটা সহায়ক হবে?

দেখুন, চলচ্চিত্র সংকট সবসময়ই ছিল, এখনো আছে। তবে দর্শক কখন, কোন মাধ্যমে স্থির হয়ে যাবে সেটা বলা যাবে না। এখন ছবি দেখার তো বিভিন্ন মাধ্যম চলে এসেছে। একটি ছবি নির্মাণের উদ্দেশ্য থাকে দর্শকরা দেখবে, প্রযোজক টাকা পাবে। কিন্তু এখন তো দর্শকরা টাকা দিচ্ছে না। তাই প্রযোজক-নির্মাতারা নানা মাধ্যম নিয়ে আসছেন। সব মিলিয়ে যখন একটা সাফল্য আসবে তখন প্রযোজকরা তাদের লগ্নি ফিরে পাবেন।

৫১তম চলচ্চিত্র নির্মাণ করছেন কাজী হায়াৎ | NTV Online

জনশ্রুত আছে, সিনিয়র নির্মাতারা কাজ পাচ্ছেন বলে দূরে সরে আছেন। এই বিষয়টি নিয়ে কী মন্তব্য করবেন?

না, বিষয়টি তেমন না। আমরা যখন নতুন চলচ্চিত্রে এসেছিলাম তখনও কিন্তু সিনিয়ররা কাজ কমই পেতেন। কামাল আহমেদ, নারায়ণ ঘোষ মিতা, শিবলী সাদিকের মতো নির্মাতাদেরও দেখেছি পরিচালক সমিতিতে এসে বসে থাকতে! শিবলী ভাই আক্ষেপ করে এমনও বলেছেন, ‘হায়াত্, যখন ভালো করে সিনেমার কাজ শিখলাম তখনই বাদ পড়ে গেলাম। এখন আর কেউ ডাকে না।’ আসলে অনেকে মনে করে বয়স হলে নির্মাণ করতে পারবে না! তাই সিনিয়ররা কাজ করতে পারছেন না।

কিন্তু এতে ইন্ডাস্ট্রি মেধাশূন্য হয়ে পড়বে মনে করছেন না?

না, মেধাশূন্য হবে কেন! এখন অনেক মেধাবী নির্মাতা চলচ্চিত্রে আসছেন এবং ভালো কাজ করছেন। আমাদের মূল সমস্যা হলো দর্শকরা ছবি দেখছেন কিন্তু প্রযোজকরা টাকা পাচ্ছেন না।

ইত্তেফাক/জেডএইচডি

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন