‘কৃষ্ণচূড়া, লালে রাঙা আগুন ঝরা, প্রিয়ার খোঁপার ফুল/কৃষ্ণচূড়া, হাওয়ায় খেলা পাপড়ি দোলা, বঁধুর কানের দুল।’ গ্রীষ্মের গরম হাওয়ায়, কৃষ্ণচূড়ার নরম ছোঁয়ায় প্রকৃতি যেন নবরূপে আবির্ভূত। শহরের পথে সারি সারি গাছের ডগায় ফুটছে কৃষ্ণচূড়া ফুল। কখনো বাতাসে দুলছে। গাঢ় লাল, কমলা, হালকা হলুদ রঙের ফুলে ভরে গেছে প্রতিটি শাখা।
কৃষ্ণচূড়া বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ। এই গাছ চমৎকার পত্র-পল্লব এবং আগুনলাল ফুলের জন্য প্রসিদ্ধ। বাংলাদেশে সাধারণত বসন্তকালে এই ফুল ফুটলেও গ্রীষ্ম পর্যন্ত চলে তার রাজত্ব। ফুল বড় চারটি পাপড়িযুক্ত। পাপড়িগুলো ৮ সেন্টিমিটারের মতো লম্বা হতে পারে। কৃষ্ণচূড়া জটিল পত্র বিশিষ্ট এবং উজ্জ্বল সবুজ। প্রতিটি পাতা ৩০ থেকে ৫০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ২০ থেকে ৪০টি উপপত্র বিশিষ্ট।
বরিশাল শহরের আনাচকানাচ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গণে দেখা মেলে রক্তিম কৃষ্ণচূড়ার। ঝলমলে রং আর কখনো কখনো বাতাসে সোঁদা গন্ধে আপন ছন্দ তুলে ধরে প্রকৃতিতে। বিশেষ করে কীর্তনখোলার তীরে বরিশাল লঞ্চঘাটে দেখা যায় রাশি রাশি কৃষ্ণচূড়া। মনে হয় যেন নীল আকাশের নিচে প্রকৃতির এক রঙিন আলপনা।
কৃষ্ণচূড়ার এমন বাহারি রূপে মুগ্ধ হয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছিলেন,
‘কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরী কর্ণে
আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে।’
গ্রীষ্মের খরতাপে দগ্ধ ধরাতলে সুশীতল ছায়া ও তীব্র রঙের ঝলকানিতে মুগ্ধকর আবেশ ছড়িয়ে কৃষ্ণচূড়া ফুল জানান দেয় তার সৌন্দর্যের।
ইত্তেফাক/এএইচপি