শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ডাক্তাররা আসেন ১১টায়, আধঘণ্টা পরই চলে যান!

আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২১, ০৮:৫৩

হাসপাতালে এসে ডাক্তারদের পাওয়া যায় না। তাদের থাকার কথা সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত। অথচ কয়েক জন আসেন বেলা ১১টার দিকে, আবার সাড়ে ১১টায় চলে যান। হাসপাতালের সামনের মেডিসিনের দোকান ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তারা রোগী দেখেন। হাসপাতালের খাবারের মান অত্যন্ত খারাপ। নিয়ম অনুযায়ী রোগীদের খাবার দেওয়া হয় না। রোগী ভর্তিসহ সব সেবাই কার্যত টাকা দিয়ে কিনে নিতে হয়।

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অব্যবস্থাপনা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মোশারফ হোসেন, ওয়াসিম, শরিফ হোসেনসহ কয়েক জন রোগী এমন অভিযোগ করেছেন। তবে অভিযোগগুলো সঠিক নয় দাবি করে আরএমও ডা. কামরুল ইসলাম জানান, আমাদের সাধ্যমতো আমরা চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। লোকবলের সংকট নিরসন হলে সেবার মান আরও বৃদ্ধি করা যাবে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সাড়ে ৬ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র সরকারি হাসপাতাল এটি। হাসপাতালটিতে টেকনিশিয়ান না থাকায় বন্ধ রয়েছে এক্সরে। ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটি এখন চলছে সেই ৩১ শয্যার জনবল দিয়ে। হাসপাতালে ডাক্তারের অনুমোদিত পদ সংখ্যা ২৩টি। যে কজন আছেন, তার মধ্যে দুই জন প্রেষণে ও এক জন রয়েছেন অননুমোদিত ছুটিতে। মাঠকর্মী ১৯৩ জনের স্থলে কর্মরত রয়েছেন ১৩৭ জন, শূন্য রয়েছে ৫৬টি পদ। দুটি অ্যাম্বুলেন্সের দরকার থাকলেও রয়েছে মাত্র একটি। ডিজিটাল এক্সরে মেশিন একটি ও সাধারণ এক্সরে মেশিন রয়েছে একটি। অপারেশন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।

করোনা ইউনিটে বর্তমানে মাত্র সাতটি বেড রয়েছে। রোগীর তুলনায় যা অপ্রতুল। তাছাড়া কোনো হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা নেই। উপজেলায় করোনা শনাক্তের হার ৪১ শতাংশ হলেও ল্যাব টেকনিশিয়ান তিনটি পদের মধ্যে মাত্র একটি পদে লোক রয়েছে। মিডওয়াইফের একটি পদ শূন্য রয়েছে। পরিচ্ছন্নতা কর্মীর পাঁচটি পদের মধ্যে দুইটি শূন্য রয়েছে। ফলে এত বিশাল হাসপাতাল ক্যাম্পাসটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা যাচ্ছে না। এছাড়া এখানে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর চারটি পদ শূন্য রয়েছে। মেডিসিন সার্জারি, অ্যানেসথেসিয়া, চক্ষু, অর্থোপেডিক, চর্ম ও যৌন, ইএনটি, কার্ডিওলজি, গাইনি ও শিশু কনসালট্যান্টের পদ শূন্য রয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচও) মো. আশ্রাফুজ্জামান চৌধুরী জানান, সার্বিক চিকিৎসা সেবা আগের চেয়ে অনেকটা ভালো। ৫০ শয্যায় উন্নীতের প্রশাসনিক অনুমোদন পেয়েছি, জনবল ও পদ সৃজনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট চিঠি পাঠিয়েছি। ডাক্তারদের উপস্থিতি সন্তোষজনক ও দালাল চক্র সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

ইত্তেফাক/এমআর

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন