বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণে প্রবিধানমালা দ্রুত জারির আহ্বান

আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৮:২৬

ট্রান্সফ্যাটের প্রধান উৎস পারশিয়ালি হাইড্রোজেনেটেড ওয়েল (পিএইচও)। ডালডা বা বনস্পতি ঘি এবং তা দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাবার, ফাস্টফুড ও বেকারি পণ্যে ট্রান্সফ্যাট থাকে। উচ্চ মাত্রায় ট্রান্স ফ্যাট গ্রহণের ফলে হৃদরোগসহ নানা রোগে মৃত্যুঝুঁকি বৃদ্ধি করে। 

ট্রান্সফ্যাটের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে এ সংক্রান্ত প্রবিধিান মালার খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। বর্তমানে খসড়াটি ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের রয়েছে বলে জানিয়েছেন বক্তারা। 

তারা বলেছেন, খাদ্যে উচ্চমাত্রার শিল্পোৎপাদিত ট্রান্সফ্যাটের কারণে প্রতিবছর পৃথিবীতে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ হৃদরোগে মৃত্যুবরণ করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী ট্রান্সফ্যাটঘটিত হৃদরোগে মৃত্যুর সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম থাকলেও ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণের খসড়া নীতিমালাটি এখনো চূড়ান্ত করতে পারেনি সরকার।

দ্রুত এই প্রবিধানমালা দ্রুত জারি করার আহ্বান জানান তারা। ‘ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা: অগ্রগতি ও করণীয়’ শীর্ষক এক কর্মশালায় বক্তারা একথা বলেন। 

গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)-এর সহায়তায় অ্যাডভোকেসি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা’র (প্রগতির জন্য জ্ঞান) উদ্যোগে শনিবার বিএমএ মিলনায়তনে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। 

গ্লোবাল হেলথ এডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)-এর বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মো. রূহুল কুদ্দুস বলেন, ‘ট্রান্সফ্যাট নির্মূলের অর্থনৈতিক গুরুত্বও অনেক। আমাদের প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের রপ্তানি বাজার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ট্রান্সফ্যাটমুক্ত পণ্য তৈরি করতে না পারলে আমরা আন্তর্জাতিক বাজার হারাবো এবং দেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশে ট্রান্সফ্যাটঘটিত হৃদরোগ ঝুঁকি বাড়বে এবং চিকিৎসা খাতে ব্যয় বাড়বে।’

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) এর সদস্য মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, ‘খাদ্য মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যেই খসড়া প্রবিধানমালাটি চূড়ান্ত করতে ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চূড়ান্ত হবে।’  

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের গবেষকদল ঢাকার ডালডা নমুনার ৯২ শতাংশে ডব্লিউএইচও সুপারিশকৃত শতকরা ২ ভাগ মাত্রার চেয়ে বেশি ট্রান্সফ্যাট (ট্রান্স ফ্যাটি এসিড) পেয়েছেন, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সেজন্য হৃদরোগের ঝুঁকি এড়াতে খাদ্যভাসে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হবে।’ 

ব্রাক ইউনিভার্সিটির জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ এর অ্যাসোসিয়েট সায়েন্টিস্ট আবু আহমেদ শামীম বলেন, ‘শিল্পোৎপাদিত ট্রান্সফ্যাট খাদ্যের একটি বিষাক্ত উপাদান যা হৃদরোগজনিত অকাল মৃত্যু ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।’

কর্মশালায় প্রজ্ঞা’র পক্ষ থেকে নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের, ট্রান্সফ্যাট নির্মূল প্রকল্পের টিমলিডার মো. হাসান শাহরিয়ার এবং প্রকল্প সমন্বয়ক মাহমুদ আল ইসলাম শিহাব বক্তব্য রাখেন। 

তারা বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০২৩ সালের মধ্যে বিশ্বের খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খল থেকে ট্রান্সফ্যাট নির্মূলের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে এবং এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) এ সংক্রান্ত প্রবিধানমালা প্রণয়নে কাজ করছে।’

ইত্তেফাক/এএএম

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন