স্নাতক করেছেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে করেছেন এমবিএ। চাকরি করেছেন বহুজাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। একটা সময় চাকরি ছেড়ে দেন। সুযোগ পেয়েছিলেন স্কলারশিপ নিয়ে লন্ডন পড়তে যাওয়ার। তাতেও সায় দেয়নি মন। ভাবলেন দেশে থেকে প্রশিক্ষণ করাবেন৷ কিন্তু শুরু করে তেমন একটা সফল হতে পারলেন না। তাতে একটুও ঘাবড়ালেন না তিনি। মনোবল চাঙা রেখে খুঁজেছেন আনন্দের কাজ। পেয়েও যান একটা সময়। সিভি লেখাটাকে নিয়ে নেন পেশা হিসেবে।
বলছিলাম কর্পোরেট আস্কের সিইও নিয়াজ আহমেদের কথা। সম্প্রতি তিনি ছুঁয়েছেন দশ হাজার সিভি লেখার মাইলফলক। এমন সাফল্যে দেশের বিভিন্ন শ্রেণির গুণীজনের প্রশংসায় ভাসছেন নিয়াজ। যাত্রা নিয়ে নিয়াজ বলেন, ' এই জার্নি অনেক পেইনফুল ছিলো, তবে বাংলাদেশে এটা আমি প্রথম শুরু করি, এবং এখন মোটামুটি প্রতিষ্ঠিত বলা যায়। সামনে আরও এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখি।'
নিয়াজ আহমেদ ২০১৫ সাল থেকে সিভি লিখেন। প্রথম প্রথম অফিসের কলিগদের সিভি লিখতেন বা চেক করে দিতেন। এর জন্যে তখন কেউ টাকা দিতো না। সে বছরের শেষ দিকে একজনকে সিভি ও কভার লেটার লিখে দেওয়ার বিনিয়ময়ে পান ৩০০০ টাকা সম্মানী। সিভি লিখে সেটিই ছিল তাঁর প্রথম উপার্জন। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। কষ্টের সময়টা ধৈর্যের সাথে মোকাবেলা করে ফিরিয়েন আনেন সুদিন।
২০১৬ সালে যাত্রা শুরু করেন কর্পোরেট আস্ক নামের প্রতিষ্ঠানের। সে প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন নামি-দামি কোম্পানির বড় বড় কর্তকর্তাদেরও সিভি লিখে দেন তিনি। এমনকি সিভির জন্য অনেক প্রবাসীও ভরসা রাখেন এখন কর্পোরেট আস্কের উপর। সিভি লিখার পাশাপাশি ক্যারিয়ার গাইডলাইন ও অনুপ্রেরণামূলক বই লিখেও নিজের লেখক সত্ত্বার জানান দিয়েছেন নিয়াজ। ইতোমধ্যে তাঁর ১৪ টি বই প্রকাশিত হয়েছে। সিভি এবং ক্যারিয়ার নিয়ে লিখেছেন দেশের প্রথম সারির বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে। অনুপ্রেরণারদায়ী বক্তা হিসেবেও তারুণ্যের কাছে পেয়েছেন বেশ জনপ্রিয়তা। ক্যারিয়ার বিষয়ক কর্মশালা আয়োজনের পাশাপাশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত সেমিনারেও অংশ নেন ট্রেইনার হিসেবে। নিয়াজ আহমেদের কাছে সমালোচনাই সবচেয়ে বড় ব্রান্ডিং। সফলতার মূলমন্ত্র মনে করেন জোকের মতো লেগে থাকাকে। তাই তো সমালোচকদের কটু মন্তব্যকে পাত্তা না দিয়ে সিভি লেখার মতো একটা কাজকে বাংলাদেশে নিয়ে গিয়েছেন পেশাদারিত্বের জায়গায়। নিয়াজ লক্ষ লক্ষ মানুষের ক্যারিয়ার ডেভলপমেন্টের জন্যে কাজ করে যেতে চান।
ইত্তেফাক/এসটিএম