জীবনে সফল হতে চায় না এমন লোক পৃথিবীতে সম্ভবত একটাও খুজে পাওয়া যাবে না, হোক না সে ভালো বা মন্দ লোক। তাই বলা হয় সবচেয়ে বড় প্রতিশোধ হলো সফলতা অর্জন করা।
কেউ যখন জীবনে সফলতা অর্জন করে তখন সমাজে সবাই তাকে সম্মান করে থেকে। এমনকি শত্রুরাও তখন অনুশোচনা করে, যে কেন তার সাথে সর্ম্পক খারাপ করলাম। তাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধনী বা সফল ব্যাক্তিদের কিছু গুণ আসুন জেনে নেওয়া যাক। যার দ্বারা তারা পৃথিবীতে রাজত্ব করছেন আজ।
পরিকল্পনা
সফল ব্যাক্তিরা সর্বদা সকালে ঘুম থেকে উঠেই সারাদিন-এর কাজ আগেই পরিকল্পনা করে নেন। আগে ভালো করে প্রস্তুতি নিয়ে তারপর কাজ শুরু করেন। একবার একজন দার্শনিক বলেছিলেন, “যদি ৩ ঘন্টায় একটি গাছ আমাকে একাটি কুঠার দিয়ে কাটতে বলা হয়, তাহলে আমি প্রথম ২ ঘন্টা ব্যায় করব কুঠার শান দিতে, এবং বাকী ১ ঘন্টা ব্যায় করব গাছটি কাটতে।”
শ্রম ও বাস্তবায়ন
পরিকল্পনা করে শুধু ঘরে বসে থাকলেই সব বৃথা। আপনার স্বপ্নকে আপনি এখানেই সমাধি দিয়ে দিলেন। উল্লেখ্য যে, “যে পরিমান সময় স্বপ্ন পৃথিবীর সব মানুষ দেখতে ব্যায় করে, তার অর্ধেকও যদি তারা কাজে ব্যায় করতো, তাহলে দারিদ্র্যতা এই শব্দাটি পৃথিবী থেকে অনেক আগেই উঠে যেতো।
নিজের শক্তি এবং দুর্বলতাকে খুজে বের করা
সবাইকে সবকিছু সৃষ্টিকর্তা দেন না। আবার ১টা না ১টা বিশেষ গুণ সবাইকে দেন, যেটা আবার সবার মধ্যে থাকে না। তাই এই গুণটিকে আপনারই খুজে বের করে সেটিকে কাজে লাগাতে হবে এবং আপনার দুর্বলতা আপনাকেই কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করতে হবে প্রতিনিয়ত।
চাইনীজ বিলিওনার জ্যাক মা বলেছিলেন-““আমি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষায় দুইবার ফেল করেছি, আমি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষায় তিনবার ফেল করেছি, আমি কলেজের প্রবেশিকা পরীক্ষায় দুইবার ফেল করেছি” মানে তিনি মোট ৭ বার ফেইল করেন স্কুল থেকে কলেজে ওঠার মধ্যে। আর তিনিই এখন চীনের সবচেয়ে এবং বিশ্বের ৩৩তম ধনী ব্যাক্তিদের মধ্যে একজন। কারণ শুধুমাত্র লেখাপড়ায় ভালো হওয়া মানেই সবকিছু একদমই না, তার আইটি মেধাকে কাজে লাগিয়ে তিনি আজ আলীবাবা গ্রুপ এর স্থাপক সহ কোম্পানির সিইও।
ধৈর্য্য
জীবনের উত্থান পতন-এর পাশাপাশি ধৈর্য্য রাখাটা সবথেকে জরুরি। সেটা যদি আপনার না থেকে তাহলে সময়ের সাথে সাথে সব কিছুই মাটি। ভারতের ক্রিকেট খেলোয়াড় শচিন টেন্ডুলকারের ছোটবেলার বন্ধু ছিলেন বিনোদ কাম্বলি, তিনি টেন্ডুলকারের চেয়েও অনেক ভালো একজন খেলোয়াড় ছিলেন। কিন্তু শুধুমাত্র ধৈর্য্যের অভাব থাকার কারণবসত আজ তাকে হাতে গুনে কয়েকজনই চেনেন। অপদিকে শচিনকে চিনে না এমন লোক দেশে খুজে বের করা বেশ কঠিন।
অযুহাত
পৃথিবীতে আজ যারা সফল হয়েছেন তারা কোনোদিনই কোন কিছুতে অযুহাত দিতে শেখেন নি। কোনো ভুল হয়ে থাকলে সরাসরি নিজের দোষ নিজে স্বীকার করে নিতেন। আর তাই আজ তারা কোন কাজে ব্যার্থ হতে শেখেননি। অ্যাপেল কোম্পানির স্থাপক স্টিভ জভসকে যখন তার নিজেরই কোম্পানী থেকে বহিস্কৃত করা হয়েছিল সেইমুহূর্তে কোন কিছুই বলেননি তিনি। এরপর যা ঘটে তা এখন ইতিহাস। পৃথিবীর সবথেকে বড়ো অ্যানিমেশন / কার্টুন কোম্পানি ‘পিক্সার’ নির্মাণ করে গোটা বিশ্বকে তাকে লাগিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এর পরে অবশ্য অ্যাপল কোম্পানী আবার তাকে ফিরিয়ে আনে। তারপর স্টিভ-এর নেতৃত্বে আইফোন তৈরী করে স্মার্টফোন ইন্ডাস্ট্রিতে এক যুগান্তকারীর সূচনা তিনি করেন।
ইত্তেফাক/এফএস