ওয়াসিউ পরদিন স্কুলে যাবার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখছিল। হঠাৎ ওর মা জানালেন, স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে করোনার কারণে। কবে খুলবে ঠিক নেই। ওয়াসিউ-এর মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল। হাতে প্লেডো দিয়ে বানানো ডাইনোসর আর রাইনোসেরাসটা (গন্ডার) ভেবেছিল স্কুলে গিয়ে সবাইকে দেখাবে। মনটাই খারাপ হয়ে গেল। মা’র থেকে মোবাইলটা নিয়ে ইউটিউবে ঢুকে গেল ওয়াসিউ। সময় বেঁধে দেওয়া। আধঘণ্টার বেশি দেখা যাবে না। প্লেডো দিয়ে ডাইনোসর, রাইনোসেরাস, মোসাসরাস বানানোর টিউটোরিয়াল দেখতে দেখতে ওয়াসিউ মনে মনে ভেবে নিল, যেহেতু স্কুল বন্ধ সেহেতু বাবা-মায়ের অনুমতি নিয়ে একটা ইউটিউব চ্যানেল খুলে নিজেই যা যা পারে তার টিউটোরিয়াল বানিয়ে ফেলাই যায়। খুব সহজেই বাবা-মা অনুমতি দিয়ে দিলেন। আর ওয়াসিউ-এর ফুপ্পিকে বলায় ঠিক করা হলো- ভিডিও করে এডিট করে দেবেন ফুপ্পিই। কিন্তু সারাদিনে কেবল এক ঘণ্টায় ওয়াসিউকে সব কাজ শেষ করতে হবে। বাকি সময় পড়া, অনলাইন ক্লাস, ঘুম, ব্যায়াম, ইবাদত, গল্পের বই পড়ার জন্য বরাদ্দ। যে কথা সেই কাজ, প্রতি সপ্তাহে তিন দিন ওয়াসিউ এখন প্লেডো দিয়ে মাছ, পাখি, ঘোড়া, ডাইনোসর, রাইনোসেরাস সবকিছু বানায়। কখনো কখনো নিজের ড্রইংগুলোরও টিউটোরিয়াল করে ফেলছে। আবার কখনো ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে সারাদিনের করা কাজ, রুটিনগুলো নিয়ে বলছে। এখন সবাই সহজেই ওয়াসিউকে ইউটিউবে দেখতে পারে। ওর বন্ধুরাও এখন তার কাজগুলো ইউটিউবে দেখে নিজেরাও বাসায় নতুন নতুন কাজ করছে। ওয়াসিউ-এর কিন্তু মনটা এখন অনেক ভালো। স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়াতেও অনলাইন ক্লাসের সময় সবাইকে দেখতে পারছে, ইউটিউবে এখন ওর চ্যানেলটায় সবাই দেখতে পারছে কীভাবে প্লেডো দিয়ে অনেক মজার মজার জিনিস বানিয়ে ফেলা যায়। ওয়াসিউ এখন অপেক্ষায়- কবে স্কুল খুলবে আর সামনাসামনি সবার সাথে সম্পূর্ণ গল্পটা করবে কীভাবে তার খুদে ইউটিবার হয়ে ওঠা হলো। স্কুল বন্ধ থাকায় তোমরা যারা ঘরে বসে বসে কেবল অনলাইন ক্লাস করছ আর বাকি সময় বিরক্তি বোধ করছ, বা গেম খেলে আর টিভি দেখে ক্লান্ত, তারাও কিন্তু চাইলে ঘরে বসেই একটা ইউটিউব চ্যানেল খুলে ফেলতে পারো বাসার বড়োদের অনুমতি নিয়ে। তোমাদের করা কাজ, গান, নাচ, ছবি আঁকা, গল্পবলা নিয়ে বানিয়ে ফেলতে পারো ভিডিও। পড়ালেখা ঠিক রেখেও হয়ে যেতে পারো ছোট্ট ইউটিউবার।