গুল্টো
উল্টোটাকে সোজা বলে সোজাটাকে উল্টো
হাতটা ছেড়ে বাইকটা চালায় যশোর জেলার গুল্টো।
তাকায় পেছন সামনে হাঁটে, বলে সবই ভুল তো
সাবান ছাড়া গোসল করে, জট বেঁধেছে চুল তো।
কপালটাতে বসলে মশা গালে বসায় ঘুষি
চীনাবাদাম-পাঁপড় পেলে থাকে না তার হুঁশই।
ললিপপের ডাঁটি পেলেও বলে না সে চুষি
গরম-গরম ছড়া পেলে গুল্টো বেজায় খুশি।
লাটাই ছাড়া ঘুড়ি খোঁজে ঘুড়ি ছাড়া লাটাই
সবুজ পাতায় চিঠি লিখে নদীর কাছে পাঠায়।
রাগলে হাসে হাসলে রাগে, খায় না হাওয়াই মিঠাই
ধুলো দিয়ে ইচ্ছেমতো বানায় হরেক পিঠা-ই।
সকাল-বিকাল ফড়িং ধরে বোতল ভরে রাখে
আজব সে এক নাক জ্বলানো সুগন্ধি তেল মাখে।
চেয়ে থাকে উদাস মনে সন্ধ্যা বকের ঝাঁকে
এমন মানুষ মেলানো দায় একখানা এক লাখে।
দারোয়ান
মোটাতাজা শরীরখানা, চোখ দেখা যায় বেল
জটপাকানো উকুন মাথায় দেয় না কভু তেল।
দাঁড়িয়ে রয় গেটের ধারে পান চিবানো মুখ
অচেনা কেউ আসলে কাছে চিতলে ধরে বুক।
দুপুরবেলা ঘুমের দেশে ঝিম-ঝিমানো চোখ
গাড়ির ভেঁপু শুনলে ভয়ে গিলতে থাকে ঢোক।
বসার টুলে কাগজ থাকে অন্যদিকে মন
একটু বাদেই বড়ো সাহেব আসলো আসার ক্ষণ।
গেট খুলে দেয় সালাম দিয়ে সবার রাখে খোঁজ
সকাল-বিকাল গেটের কাছে খাটনি করে রোজ।
মুখে হাসি এই মানুষের বুকে সুখের ঢেউ
এই পাড়াতে সবাই আপন, পর ভাবে না কেউ।
শিশুমনের খেয়ালখুশি বয়স যতই হোক
যায় না পাওয়া কোথাও খুঁজে এমন মজার লোক।
ইচ্ছে হলে ছড়া পড়ে মন খুলে গায় গান
পঁচিশ বছর চাকরি করে রাকিব দারোয়ান।
নামতা লেখার খাতা
নামতা লেখার সাদা খাতায় আঁকলো খুকু শেয়াল
বাবা বলেন চোখ পাকিয়ে— হায় করেছো কী হাল!
এবার লেখো মনটা খুলে— দশ দুগুণে কুড়ি
হাত উঠেছে কপালটাতে আকাশজোড়া ঘুড়ি!
কী করেছে দুষ্টু মেয়ে
বাবা থাকেন অবাক চেয়ে
পাশেই আঁকা লম্বা সুরের হাতি
খুকু নাকি থাকবে তাদের সাথি।
কুঁচকে কপাল মেজাজ কড়া
বাবা যখন হলেন চড়া
মিষ্টি হেসে মেললো আসল খাতা,
লিখলো কখন! নামতা ভরা পাতা।
বাবার ঠোঁটে নামলো মিষ্টি হাসি
বাবা তোমায় অনেক ভালোবাসি।