বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নিজের মা-বোন-মেয়ে-প্রেমিকা-বন্ধুদের প্রতি নজর রাখেন

আপডেট : ১৮ মার্চ ২০২০, ২০:৪৩

সবাই নিজের মা-বোন-মেয়ে-প্রেমিকা-বন্ধুদের প্রতি নজর রাখেন, কারণ তখন আর তিনি বিষণ্নতায় ভুগবেন না। বিষণ্নতাকে বর্তমানে স্ট্রোক ও হূদরোগের ঝুঁকির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত মনে করছেন গবেষকরা। তবে গবেষকরা একথা পরিষ্কারভাবে বলেছেন, এন্টি-ডিপ্রেসেন্ট ওষুধগুলো স্ট্রোকের জন্য দায়ী নয়, যারা এ ধরনের ওষুধ ব্যবহার করেন তাদের স্ট্রোকের সম্ভাবনা ৩৯ শতাংশ বেশি থাকার কারণই হচ্ছে তাদের প্রচণ্ড রকম বিষণ্নতা যার জন্য তাদেরকে ওষুধের সাহায্য নিতে হয়। নারীর জন্য প্রাণঘাতী হতে পারে বিষণ্নতা, এমনটিই বলছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।

‘স্ট্রোক : জার্নাল অফ আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে ৫৪ থেকে ৭৯ বছর বয়সের ৮০ হাজার ৫৭৪ জন নারীর ওপর এ গবেষণা চালিয়ে উক্ত তথ্য পাওয়া গেছে এবং উচ্চরক্তচাপ, বহুমূত্র, হূদরোগ, ধূমপানের সঙ্গে সঙ্গে বিষণ্নতাকেও স্ট্রোকের অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। এই গবেষণাটিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে কারণ বহুদিন ধরেই গবেষকরা বিষণ্নতার সঙ্গে স্ট্রোক ও হূদরোগের সম্পর্ক আছে বলে অনুমান করছিলেন, আর এই গবেষণার মাধ্যমে সে অনুমানের সপক্ষে প্রমাণ পাওয়া গেল।

পরিবারের বা কাছের মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত গুরুত্ব ও আচরণ না পাওয়া, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত জীবনে অশান্তি, মনের কথা বলতে পারার মতো পরিস্থিতি না থাকা, ব্যক্তিগত, পারিবারিক বা কর্মজীবনে ব্যর্থতা, আর্থিক সমস্যা, স্বপ্নপূরণের পথে বাধা ইত্যাদি নানা কারণে নারী হয়ে যেতে পারে বিষণ্ন এবং এ কারণে তার মাঝে দেখা দিতে পারে দুঃখ, বেদনা, ক্ষুধার অভাব বা অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা, অনিদ্রা বা অতিরিক্ত ঘুমানোর প্রবণতা, মনোযোগের অভাব, সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগা ইত্যাদি নানা সমস্যা। চরম মুহূর্তে বিষণ্নতা নারীকে আত্মহত্যার পথেও ঠেলে দিতে পারে যার অসংখ্য প্রমাণ আমরা আশপাশে দেখে থাকি। উন্নত বিশ্বে এ ধরনের সমস্যার জন্য মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়ার রীতি আছে, আমাদের দেশেও এ ব্যবস্থা আছে কিন্তু অধিকাংশ নারীই এ সুবিধা সম্পর্কে অবগত নন বা অপ্রচলিত হবার কারণে অনেকেই বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে চান না।

তিনি কি ভাবছেন, তার মনে কোনো দুঃখবোধ, দুশ্চিন্তা, ভীতি, না-বলা-কথা আছে কি না এ ব্যাপারে অবগত থাকেন, বন্ধুর মতো সহজিয়া আচরণ করেন এবং তার পাশে থাকেন তাহলে বিষণ্নতা না পালিয়ে পথ পাবে না। তাই আজই খোঁজ নিন আপনার প্রিয় মানুষের, তার পাশে বসে গল্প করুন, তার চিন্তা-ভাবনা ও স্বপ্ন-কল্পনা, চাওয়া-পাওয়া-প্রত্যাশা সম্পর্কে জানুন, গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে ও স্বপ্ন পূরণে সাহায্য করুন, নারী নয় তাকে পরিপূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ সত্তার মানুষ হিসেবে ভাবুন। না-বলা-কথার পাহাড় যেন আপনার প্রিয় মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়ে না-ফেরার দেশে না নিয়ে যায় তার জন্য সচেতন হোন আজই। তাই সাহায্যের দায়িত্ব নিতে হবে পরিবার, বন্ধু ও আপনজনদেরকেই।

ইত্তেফাক/বিএএফ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন