শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

করোনা প্রতিরোধে যেমন হবে খাদ্য তালিকা

আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২০, ১৮:৪৭

করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে বিশ্বজুড়ে কাঁপছে মানুষ। ভাইরাসটি ঠেকাতে দেশে দেশে নেওয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। তবে ভাইরাসটির সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সবচেয়ে বেশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো দরকার। আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে দরকার ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও ট্রেস এলিমেন্ট। বিভিন্ন ভিটামিনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন ই এবং ভিটামিন ডি।
 
ভারতের সিনিয়র কনসালট্যান্ট নিউট্রিশনিস্ট নীনা সিংহ জানালেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে খাদ্য তালিকায় যেসব খাবার রাখতে পারেন। সেই সঙ্গে কোন সময়ে কী কী খেতে পারেন সে বিষয়েও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।  নীনা সিংহ জানা বলেন, কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রতি দিন ডাল, তিন বা চার ধরনের শাকসবজি এবং কমপক্ষে ২টা ফল খেতে হবে। সেই সঙ্গে শরীর ভাল রাখার আর এক উপায় হচ্ছে দিনে আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হবে। আর ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ করার কথা ভুলে গেলে চলবে না। প্রতিদিন নিয়ম করে এক্সারসাইজ চালিয়ে যেতে হবে।

তিনি জানান, এই সময় বাজারে আমলকী পাওয়া যায়। ভিটামিন সি-র এক অত্যন্ত ভাল উৎস আমলকী। সম্ভব হলে প্রত্যেক দিন এক টুকরো আমলকী খান। এ ছাড়া ঢ্যাঁড়শ, পটল, কুমড়ো, বিনস, গাজর, বাঁধাকপি, কলমি শাক, ক্যাপসিকাম, বরবটি, কড়াইশুঁটি, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, হলুদ এর সবকিছুতেই রয়েছে পর্যাপ্ত পুষ্টি। 

নীনা সিংহ আরও জানান, লকডাউনে বাড়িতে থাকার কারণে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কিছুটা কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার খাওয়া দরকার। না হলে অতিরিক্ত ক্যালোরি ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে। কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার যেমন ভাত, রুটি, মুড়ি, চিঁড়ে, সুজি পরিমাণে কম খাওয়া উচিত। তবে এসময় সালাত, ফল, স্যুপ, ছোলা, মুগডাল, বাদাম খাওয়া যেতে পারে।


নীনা সিংহের দেওয়া সারা দিনের খাদ্য তালিকা

সকালে উঠে অল্প গরম জল আর এক টুকরো কাঁচা হলুদ খেলে গলার সমস্যা দূর হয়। একই সঙ্গে সর্দি, কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জাসহ অনেক রোগ প্রতিরোধ করতে পারে। কাঁচা হলুদ না থাকলে রান্নায় ব্যবহৃত খাঁটি গুঁড়ো হলুদ গরম জলে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।

ব্রেকফাস্ট থেকে ডিনার পরিমাণ হবে ওল্টানো পিরামিডের মতো। অর্থাৎ সকালের নাস্তা পরিমাণে অনেকটা বেশি। মধ্যাহ্নভোজ তার থেকে কম পরিমাণ আর রাতের খাবার অল্প। এই বিষয়ে পুষ্টিবিজ্ঞানীরা বলেন, ব্রেকফাস্ট হবে রাজার মতো আর ডিনার দরিদ্রদের মতো।

সকালের নাস্তা

সকালের নাস্তায় ডিমসিদ্ধ, ডাল আর সালাত, গাজর, খিচুড়ি, ক্যাপসিকাম, বিনস, বরবটি,সয়াবিনের বড়ি বা ডিম দিয়ে বাড়িতে বানানো চাওমিন, সুজি, স্যুপ, ওমলেট এসব প্রয়োজনমতো খাওয়া যেতে পারে । আর নাস্তা সেরে নিয়ে মিড মর্নিংয়ে একটা লেবু, আপেল, পেঁপে, শসা বা যে কোনও একটা ফল খেলে মন্দ হয় না।

দুপুরের খাবার

সাধারণ বাঙালি খাবার— ভাত, ডাল, সব্জি, মাছের ঝোল, চাটনি, শাকভাজা, লাউ, পেঁপে বা পটলের তরকারি খাওয়া যায়। তবে খাবারের সঙ্গে সালাত আর দই বেশ উপকারী।

বিকালের নাস্তা

ভেজা ছোলা, বাদাম দিয়ে ঝালমুড়ি বা চানাছুর খেতে পারেন। পরে চিনি ছাড়া লিকার চা আর বিস্কুট হলে জমে উঠবে বিকাল। তবে মনে রাখতে হবে বাড়িতে আছেন বলে একাধিক বার চা ও কফি পান করা মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। দিনে সর্বোচ্চ চার–পাঁচ বারের বেশি চা-কফি পান করা ঠিক নয়।

রাতের খাবার

রাতের খাবার ৯টার মধ্যে খেয়ে নিতে পারলে ভাল হয়। খাবার অন্তত ২ ঘণ্টা পরে ঘুমোন উচিত। রুটি, ডাল, চানা, রাজমা, চিকেন সুবিধেমতো খাবেন। খাবার পর সহ্য হলে এক কাপ স্কিমড দুধ পান করলে ঘুম ভাল হয়।


ইত্তেফাক/আরআই