শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

জিম নিয়ে ট্রেনারের কাছে ৮ প্রশ্ন

আপডেট : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ২০:২৩

স্বাস্থ্যই সম্পদ! সুস্বাস্থ্যের জন্য ওয়ার্ক আউটের বিকল্প নেই। দেশ বিদেশে নানাভাবে মানুষ শরীরচর্চা করে থাকেন। কেউ পার্কে অথবা রাস্তায় হাঁটেন। কেউ বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করেন, আবার কেউবা জিমে জয়েন করে সেখানকার বিভিন্ন ইকুইপমেন্ট দিয়ে ওয়ার্ক আউট করেন। 

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দিনে দিনে জিম করার প্রচলন বদলাচ্ছে। মানুষের মাঝে এখন শরীরচর্চার প্রয়োজনীয়তা বোধ হচ্ছে। যার ফলে ক্রমেই মানুষ জিমে জয়েন করায় আকৃষ্ট হচ্ছেন। কিন্তু কিছু প্রশ্ন তারপরেও অনেকের মনে জেঁকে বসে আছে। 

তাদের মাঝে কিছু প্রশ্নের উত্তর পাওয়া সম্ভব ২৪ বছর বয়সী মো. সাদমান সাকিব দিপ, তিনি মোহাম্মদপুরের অক্সি জিমে একজন ট্রেইনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ইত্তেফাক অনলাইনের সাথে ভার্চুয়াল এক সাক্ষাৎকারে সাদমান জিম নিয়ে বিভিন্ন জিনিস শেয়ার করেন।

ইত্তেফাক: আপনি জিম করছেন কবে থেকে?

সাদমান: ২০১৬ সাল থেকে জিম করা শুরু করি। কিন্তু ২০১৭ থেকে ২০১৮'র জুন মাস পর্যন্ত একটা গ্যাপ হয়ে গিয়েছিলো, সে বছরই জুলাই মাস থেকে আবারও জিমে নিয়মিত হয়েছি।

ইত্তেফাক: জিমে কি মেম্বার না কি কোচ হিসেবেও কাজ করছেন? বেশি পছন্দের কোনটা?

সাদমান: দুইভাবেই কাজ করাটা অনেক বেশি উপভোগ করেছি, এখনও করছি। যদিও কোচ হিসেবে কাজ করেছিলাম অল্প কিছুদিনের জন্য। কিন্তু এখন মেম্বার হিসেবে একান্তই নিজের জন্যই করছি। কারণ মেম্বার হিসেবে থাকলে সম্পূর্ণ নিজের দিকে মনোযোগ দেওয়া যায়।

ইত্তেফাক: জিম জয়েন করেছিলেন কোন চিন্তা থেকে?

সাদমান: আমার উচ্চতা ৬ ফুট, এবং ৬ ফুট উচ্চতার একজন মানুষের নূন্যতম ৭৪-৮০ কেজি ওজন থাকা দরকার। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে তা ছিল মাত্র ৫৭ কেজি। যা নিয়ে আমি মতেও সন্তুষ্ট ছিলাম না। তখন মাথায় আসে জিম করার ব্যাপারটি।

ইত্তেফাক: লকডাউনে যখন জিম বন্ধ ছিল তখন কিভাবে ম্যানেজ করেছিলেন?

সাদমান: তখন অবশ্যই অনেকটা কষ্ট হয়েছিল। কারণ জিমের ইকুইপমেন্টের একটা ব্যাপার সব সময়ই থেকে যায়। কিন্তু বাসায় মোটেই বসে থেকে সময় নষ্ট করিনি। ফ্রি হ্যান্ড টাইপের যে ওয়ার্ক আউটগুলো রয়েছে যেমন- পুশ আপ্স, চিন আপ্স এন্ড ডিপ্স সেগুলো করেছি। আর সব থেকে ভাল করে ডায়েটটা অনুসরণ করেছি।

ইত্তেফাক: একজন মানুষের জিম করার বিষয়টিকে আপনি কিভাবে বর্ণনা করবেন?

সাদমান: আসলে আমরা সুস্থ থাকার জন্যই ওয়ার্ক আউট করে থাকি। শরীরচর্চা আমাদের শরীরের জন্য অনেক ইতিবাচক ভূমিকা রাখে, যেমন-
১। ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
২। অনাকাঙ্ক্ষিত হার্ট-অ্যাটাকের প্রবণতা কমিয়ে আনে।
৩। মানসিক সু-স্বাস্থ্য বিকাসে ভূমিকা রাখে।

আরও অনেক ক্ষেত্রেই ওয়ার্ক আউটের ভূমিকা অপরিসীম। তাই সুস্থতার জন্য অবশ্যই জিমের বিকল্প নেই।

ইত্তেফাক: যারা জিম জয়েন করতে ভয় পান, নানা বিষয় নিয়ে চিন্তিত থাকেন যেমন- একজন মেয়ের জন্য জিম আদৌ নিরাপদ কি না, স্বাচ্ছন্দ্যে ওয়ার্ক আউট করতে পারবেন কিনা, ট্রেইনার কেমন হয়, খুব ব্যয়বহুল কিনা; তাদেরকে ওয়ার্ক আউটের ইতিবাচক দিকটি কীভাবে বোঝানো সম্ভব?

সাদমান: সত্যি কথা বলতে, জিম করতে হলে অনেক বেশি ধৈর্যের প্রয়োজন। এটা মাথায় রাখতে হবে। কোনকিছুই একদিনে অর্জন করা যায় না, তার পেছনে অনেক সময় ব্যয় করতে হয়, তবেই তা অর্জিত হয়। জিমের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম না। আর একটা কথা বলেতে চাই, কোন জায়গাই সম্পূর্ণভাবে হয়তো নিরাপদ হয় না, কিন্তু অনিরাপদও হয় না। তবে এখনও পর্যন্ত আমি আমার জিম করার জীবনে কোন নারীর সমস্যা হয়েছে জিম করা সময়ে এমনটা দেখিনি। তাছাড়াও জিমের ট্রেইনার দেরও করা নির্দেশনা অনুযায়ী তারা কোন নারীর শরীরে স্পর্শ করে কোন কিছু শেখাতে পারবেন না। আর একটা কথা যোগ করতে চাই জিম ব্যয়বহুল কি না সে বিষয়ে, জিম মানুষ মূলত দুই কারণে করে থাকেন, ফিট অ্যান্ড ফাইন থাকার জন্য যদি কেউ জিম করেন তবে তা খুব একটা ব্যয়বহুল হয় না, এবং পেশা হিসেবে নিতে চাইলে একটু ব্যয়বহুল হয়ে যায়। কারণ সেক্ষেত্রে সব কিছুই শেখার থাকে।

ইত্তেফাক: যদি বয়সের কথা জিজ্ঞেস করি তাহলে কোন বয়সটি থেকে জিম জয়েন করা সব থেকে বেশি সময়োপযোগী! নাকি যে কোন সময়-ই উপযুক্ত সময়?

সাদমান: ওয়ার্ক আউটের জন্য নির্দিষ্ট কোনো বয়স নেই। ছোট থেকেই এর সাথে জড়ানো সম্ভব। কিন্তু যেহেতু বাড়ন্ত বয়স ১৬ থেকে ১৮ বছর তাই আমি মনে করি, ১৮ বছর বয়সেই ওয়ার্ক আউট শুরু করা উচিৎ। তবে সুস্থতার জন্য যেকোনো বয়স থেকেই জিম শুরু করা যেতেই পারে, এতে কোন বাধা, কোন গাঁট বাধা নিয়মও নেই।

ইত্তেফাক: খাদ্যাভ্যাসের কি অনেক বেশি পরিবর্তন হয়, আর যদি হয় তাহলে সে পরিবর্তন কি গ্রহণ করতেই হবে নাকি নিজের মতোই খাদ্যাভাস রাখা যাবে?

সাদমান: এটাই অনেক বেশি মজার একটি বিষয়। আমরা বাঙালীরা সচরাচর অনেক উল্টাপাল্টা খাবার খেয়ে থাকি, নিয়ম মেনে কখনই খাই না। কোন খাবারটি ক্ষতিকারক আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য, কি খাওয়া উচিৎ, কি খাওয়া উচিৎ নয় তা নিয়ে আমরা খুব কমই ভাবি। তাই জিম করার সময় আমাদের এ অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাসটি অনেকটা নিয়মের মাঝে চলে আসে। স্বাস্থ্যকর খাবারটাই খাওয়া হয়। যা আমাদের শরীরের জন্য যথেষ্ট উপযোগী ও কার্যকর ভূমিকা রাখে সুস্বাস্থ্য পর্যালোচনায়।

ইত্তেফাক/জেডএইচ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন