শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বর্ষায় সুস্থ থাকতে ভেষজ চা পান করুন  

আপডেট : ২৩ জুন ২০২১, ১৯:০২

বর্ষার রোদ-বৃষ্টিতে কখনো গরম কখনোবা অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থায় ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। মূলত হুটহাট বৃষ্টি পরক্ষণেই রোদ, তাপমাত্রার এই তারতম্যের কারণেই সর্দি-গলাব্যথা খুব সহজেই ধরে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে নাক দিয়ে পানি পরা, গা-হাত-পায়ে ব্যথা এসব তো আছেই। এই সময়টা সবারই স্বাস্থ্য বিষয়ে সর্তকতা অবলম্বন করা উচিত।

প্রতিদিনই আমরা বিভিন্ন সময়ে চা পান করে থাকি। বাড়িতে, কর্মক্ষেত্রে কেউ লিকার চা, কেউবা দুধ মিশিয়ে চা আবার কেউবা অন্য কোনো ফ্লেবারের চা খেতে পছন্দ করেন। চা কেবল একটি সতেজ পানীয় নয় এটি স্বাস্থ্যের পক্ষেও উপকারী। চায়ে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য। এতে কফির চেয়ে কম ক্যাফিন আছে যা ওজন হ্রাসেও সহায়তা করে। বর্ষাকালে এমন ৫টি ভেষজ চা খেতে পারেন যা আপনাকে সর্দি-গলাব্যথা, গা-হাত-পায়ে ব্যথা এমন সব অসুখ থেকে রক্ষা করবে।  

আদা চা: নিয়মিত আদা দিয়ে চা পানে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, কোলেস্টেরলের মাত্রা কম রাখা, রক্ত জমাট বাধা রোধ করে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি সহ হার্ট ভালো রাখে। সর্দি কাশির সময়টাত সামান্য আদার গুণে উপশম পাওয়া যায়। গরম চায়ের সঙ্গে আদা মিশিয়ে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। আদাতে ভিটামিন, খনিজ ও অ্যামিনো অ্যাসিড রয়েছে। এটি রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া উন্নত করে হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে। পাশাপাশি আদার রস ধমনিতে চর্বি জমতে বাধা দেয়। ফলে প্রতিদিন আদা-চা পান করলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই কমবে।

পুদিনা চা: পুদিনা পাতা সকলের কাছেই পরিচিত। এই পাতার মূল, পাতা, কান্ডসহ সমগ্র গাছই ওষুধীগুণে পরিপূর্ণ। বর্ষাকালে সর্দি-কাশি উপসমে পুদিনা পাতার চা বেশ কার্যকরী। পুদিনা পাতা সুগন্ধি হিসাবে রান্নায় ব্যবহার করেন অনেকে। কাবাব, চাটনি, মশলায় ব্যবহার করা হয় পুদিনা পাতা। বিভিন্ন দেশে পুদিনার ব্যবহার হচ্ছে তেল তৈরিতে। পুদিনার মধ্যে থাকা মেন্থল ভীষণ উপকারী। তাই লিকার চায়ের মধ্যে পুদিনা পাতা মিশিয়ে খানিকক্ষণ ঢেকে রেখে তারপর পান করুন। ভালো উপকার পাবেন। তার আগে চায়ের পানি আদা দিয়ে ফুটিয়ে নিতে ভুলবেন না।

গ্রিন টি: বৃষ্টির মৌসুমটাতে গ্রিন টি স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারি। ওয়েটলেস ড্রিঙ্কেও কথা বলতে গেলে গ্রিন টি’র নাম সবার আগে চলে আসে। শুধু সর্দি-কাশি নয়, ওজন হ্রাস থেকে রক্তে শর্করা ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ ও হজমে সহায়তা করে গ্রিন টি। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন দিনে এক বা দু’কাপ গ্রিন টি পান করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। গ্রিন টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, নিয়মিত খেতে পারলে ত্বক, চুল সবই ভালো থাকে।

ক্যামোমাইল টি: ভেষজ চা-এর মধ্যে অন্যতম ক্যামোমাইল টি। ক্যামোমাইল ফুল থেকে তৈরি হয় এই চা। এই চায়ের মধ্যে ক্ষতিকর ক্যাফিন থাকে না। ক্যামোমাইল চা পানে স্নায়ুর উত্তেজনা কম থাকে। ঘুম ভালো হয়। মূলত দুই রকমের ক্যামোমাইল চা ব্যবহার করা হয়, রোমান ও জার্মান। তবে যারা গর্ভবতী, তাদের এই চা এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ক্যামোমাইল যেহেতু ফুল থেকে তৈরি তাই এই চা খুব ভালো করে সংরক্ষণ করতে হবে। কাঁচের জারে রাখতে হবে এই চা। সেই সঙ্গে দেখা প্রয়োজন সূর্যের তাপ যাতে না লাগে। অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা পরিবেশে রাখতে হবে এই চা।

জবা ফুলের চা: জবা ফুলের চা অসাধারণ পুষ্টিকর পানীয়। জবা ফুলের চায়ের রঙ চুনির মতো লাল, খেতে খানিকটা টক। এ কারণে অনেকেই একে টক চাও বলে থাকেন। এটির স্বাদ অনেকটা ক্র্যানবেরি জুসের মতো। এটি ঠাণ্ডা বা গরম দুই ভাবেই খাওয়া যায়। কোনো ক্যাফিন না থাকায় শরীরের পক্ষে খুব উপকারী। দিনে একাধিক বার খেলেও কোনো খারাপ প্রভাব শরীরে পরে না। এটি উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল কমায়, হজমের সমস্যা দূর করে,  লিভারের রোগ সারাতেও জবা ফুলের গুণ অনস্বীকার্য। এমনকী ক্যানসারের প্রবণতা কমাতেও দারুণ উপকারী জবা ফুলের চা। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই, মিনারেল, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। এছাড়া উদ্বেগ ও উদ্দীপনা কমাতেও প্রভাব রয়েছে জবা ফুলর চায়ের। 

ইত্তেফাক/আরএম

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন