শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

দাম্পত্যে দূরত্ব বাড়লে কী করবেন

আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:৫৬

কয়েক বছর ধরে বিবাহ বিচ্ছেদ আতঙ্কজনক হারে বাড়ছে। বিয়ের কয়েক বছর যেতে না যেতই ফাটল ধরে যাচ্ছে সম্পর্কে। বিয়ের পর যত দিন গড়াতে থাকে স্বামী বা স্ত্রীর পারস্পরিক সহমর্মিতা কিংবা আকর্ষণবোধ ধীরে ধীরে ফিকে হতে থাকে। ছোটখাটো খুঁত একটা সময় বড় হয়ে দেখা দেয়।  কিন্তু দাম্পত্যে ভুল বুঝাবুঝি, ঝগড়া, মনমালিন্যে দূরত্ব হতেই পারে। সেখানে বিচ্ছেদ কোনো সমাধান নয়। বরং একে অপরের পছন্দ-অপছন্দের দিকে নজর দিলে সহজেই ভালো থাকা যায়।

প্রতারণা করবেন না
বিয়ের আগে মেয়ে বা ছেলে যদি ব্যক্তিগত তথ্য লুকিয়ে রাখে কিংবা সে নিজের সম্পর্কে বাড়িয়ে বলে, যা সে না,  তাহলে বিয়ের পর সেটা প্রকাশ পাওয়ার পর দূরত্ব বেড়ে যায়। এবং অবশ্যই এটাকে প্রতারণা বলা যায়। আর কোনো স্ত্রী যদি স্বামীর সঙ্গে কিংবা কোনো স্বামী যদি তার স্ত্রীর সঙ্গে একবার প্রতারণা করে বা ঠকায়, তাহলে অবিশ্বাসের দাগ মনে স্থায়ীভাবে গেঁথে যায়। এ দাগ কিন্তু সহজে ওঠে না। এর ফলে প্রতারিত স্বামী বা স্ত্রী সব সময় তার সঙ্গীকে সন্দেহের চোখে দেখতে থাকে। ভবিষ্যতে আবার প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা তাকে ডিভোর্সের দিকে নিয়ে যায়। তাই বিয়ের আগে কিছু লুকাবেন না কিংবা নিজেকে জাহির করার জন্য বাড়িয়ে বলবেন না। সম্পর্কে সৎ থাকুন, দেখবেন ভালো থাকবেন।

বেড়াতে গেলে সঙ্গীকে বলুন
যদি স্বামী বা স্ত্রী পরস্পরের দায়িত্বশীলতা আগের মতো অনুভব না করেন, সংসারের কোনো বিষয়ে একাই সিদ্ধান্ত নেন, এমনকি ছুটির দিনে স্বামী বা স্ত্রীকে সময় না দিয়ে একাই বাইরে থেকে বেড়িয়ে আসেন, তাহলে বুঝবেন সম্পর্কে বড় ধরনের চিড় ধরেছে। ‍এতে দাম্পত্যের বন্ধন হুমকির মধ্যে পড়ে যায়। এক্ষেত্রে দুজন একে অপরকে বুঝার চেষ্টা করুন। বাইরে গেলে অবশ্যই সঙ্গীকে বলুন, তার মতামতকে গুরুত্ব দিন।

পরস্পরকে বোঝার চেষ্টা করুন
দুজনের দুই রকমের ভাবনা থাকতেই পারে। কিন্তু বিয়ের পর ছাড় দিতে হবে পরস্পরকে। কোনো সিদ্বান্তে দ্বিমত হলে কথা বলে সমাধান করে নেবেন। এক্ষেত্রে একে অপরকে বুঝার চেষ্টা করুন। সব সময় সংসারে নাই-নাই করবেন না। স্বামীর উপার্জন কতটুকু সেটা আগে জানুন। তেল-লবণ-ডালের  নিরস-নিরুত্তাপ আলাপ-আলোচনাগুলো যতটা সম্ভব কম করার চেষ্টা করুন। এতে দাম্পত্য হাঁপিয়ে ওঠবে না এবং কখনো ডিভোর্সের মতো বেদনাদায়ক পরিণতিও বয়ে আনবে না।

ঝগড়া ঝড়ে ভেঙ্গে পড়বেন না 
দাম্পত্যজীবনে ভুল বোঝাবুঝি ও ঝগড়া হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। যদি স্বামী বা স্ত্রী দুজনে সারাক্ষণই রূঢ় ভাষায় কথা বলেন, খিটমিটে আচরণ করেন এবং তার জন্য কোনো অনুশোচনাও বোধ না করেন, তাহলে অবশ্যই দুজন সমস্যাগুলো কেন হচ্ছে, তা নিয়ে কথা বলুন। এতে দাম্পত্যে শান্তি ফিরে আসবে। 

দুটি হৃদয় যেন অভিন্ন হয় 
বিয়ের পর কিন্তু আপনি একা নন। স্বামী-স্ত্রীর দুইটি দেহ কিন্তু প্রাণ এক। ভালোবাসা এমনই এক বন্ধন যা স্বামী-স্ত্রীকে দুঃখ-কষ্টে মানসিকভাবে এক করে রাখে। খোলা মনে সংসার-সন্তানের দায়িত্ব ভাগ করে নিন, দেখবেন অভিযোগ-অনুযোগ থাকবে না। পারস্পরিক দায়িত্বের ভাগাভাগির মানসিকতা যত বাড়বে, সংসারে শান্তি ততই বাড়তে থাকবে। আর অবশ্যই স্বামী-স্ত্রীর স্বাভাবিক বন্ধন টিকিয়ে রাখার প্রধান শর্তই হলো সুস্থ ও স্বাভাবিক যৌন সম্পর্ক। যতদিন স্বামী-স্ত্রীর মাঝে যৌন আগ্রহ থাকবে ততদিন দাম্পত্যজীবনও ভালো থাকবে। 

ইত্তেফাক/আরএম

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন