চুল রঙ বা কালার করা এখন ফ্যাশনের অন্যতম অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার অনেকে পাকা চুল ঢাকতেও চুল কালার করে। কিন্তু আমাদের কিছু ভুলের জন্য কালার বেশিদিন স্থায়ী হয় না। আর চুলও অনেক রুক্ষ হয়ে যায়। তবে কয়েকটি বিষয় মেনে চললে বাড়িতে কালার চুলের যত্ন নেওয়া সম্ভব।
হেয়ার কালারে রয়েছে ক্ষতিকর অ্যামোনিয়া যা এক ধরনের ক্যামিকেল ব্লিচিং এজেন্ট এবং এটি চুলকে কালার করার সাথে সাথে চুল রুক্ষ ও নিষ্প্রাণ করে তোলে যার ফলে হেয়ার ফল হয়। তাই কালার করা চুলের জন্য অবশ্যই বিশেষ যত্ন নেয়া চাই। রং করার সময়ে উপযুক্ত ‘ডেভেলপার’ ব্যবহার করুন। ডেভেলপার হল এক ধরনের ক্রিম জাতীয় জিনিস যাতে থাকে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড।এটি চুলে রং ধরে রাখতে সাহায্য করে। আপনাকে অবশ্যই ২০ বা ৩০ ভলিউম ডেভেলপার ব্যবহার করতে হবে। এতে চুলের ক্ষতি কম হবে।
আপনাদের জন্য রইল কালার করা চুলের যত্ন নেয়ার কিছু টিপস:
চুল ময়েশ্চারাইজড রাখুন
চুল কালার করানোর আগে থেকেই চুল যতটা সম্ভব স্বাস্থ্যকর এবং ময়েশ্চারাইজড রাখার চেষ্টা করুন এবং কমপক্ষে ৩-৪ সপ্তাহ আগে থেকে চুলে কোন কেমিকেল ট্রিটমেন্ট করাবেন না।
দুইদিন পরে শ্যাম্পু করুন
চুলে কালার করা হয়ে গেলেই শ্যাম্পু করবেন না। যদি দুইদিন পরে শ্যাম্পু করেন তাহলে দেখবেন সুন্দর রং বসে গেছে আর তাড়াতাড়ি উঠে যাবে না। তাই ঘন ঘন রং করতেও হবে না। আর দুইদিন শ্যাম্পু না করলে যে সাধারণ তেল মাথার তালুতে তৈরি হবে তা চুলকে স্বাভাবিক সুরক্ষা দেবে। রং করার জন্য চুল শুষ্ক, রুক্ষ হয়ে যাওয়ার সমস্যা কমবে।
ডিপ কন্ডিশন
চুল শক্ত করতে এবং ভলিউম বাড়াতে কালার করানোর আগে নিয়মিত ডিপ কন্ডিশন করুন। ডিম, কলা এবং টক দই সমান পরিমাণে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে এই হেয়ার প্যাকটি চুলের গোঁড়ায় এবং সারা চুলে ভালো মতো লাগিয়ে এক ঘণ্টা রাখুন।
কালার প্রটেক্টিং শ্যাম্পু ব্যবহার করুন
কালার করা চুলের জন্য স্পেশালি কালার প্রটেক্টিং শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। এসব শ্যাম্পু চুলের কালার ঠিক রাখতে সাহায্য করে এবং চুলের ময়েশ্চারাইজার বজায় রাখে।
হট অয়েল ট্রিটমেন্ট
কালার করা চুলে সপ্তাহে অন্তত একবার হট অয়েল ট্রিটমেন্ট করুন। চুল ডিপ কন্ডিশন করতে এর জুড়ি নেই। পরিমাণ মত অলিভ অয়েল, আমনড অয়েল এবং নারিকেল তেল একসাথে মিশিয়ে হালকা গরম করে চুলের গোঁড়ায় ভালো মতো ম্যাসাজ করুন। এটি চুলের নিষ্প্রাণ ভাব দূর করে চুল সিল্কি ও সুন্দর করে।
হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করবেন না
যতটা সম্ভব হেয়ার ড্রায়ার, কার্লার বা চুল আয়রন করা থেকে বিরত থাকুন। এসব জিনিস চুলকে ভেতর থেকে ড্যামেজ করে এবং ধীরে ধীরে চুল রুক্ষ ও মলিন হয়ে পরে। এছাড়াও চুল পড়ার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে এসব হেয়ার স্টাইলার ব্যবহার করা।
লিভ ইন কন্ডিশনার
চুল নরম ও উজ্জ্বল রাখতে লিভ ইন কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। এই কন্ডিশনার চুল থেকে ধুয়ে ফেলতে হয় না এবং এটি চুল নরম ও শক্ত করতে সাহায্য করে। চুলে শ্যাম্পু করার পর ভেজা চুলে বা হালকা ভেজা চুলে লিভ ইন কন্ডিশনার অ্যাপ্লাই করুন। এটি সরাসরি স্ক্যাল্পে না দিয়ে স্ক্যাল্পের ১-২ ইঞ্চি নিচ থেকে অ্যাপ্লাই করা শুরু করুন। কেনার আগে কন্ডিশনারের উপাদান গুলোতে একবার চোখ বুলিয়ে দেখে নিন যে তাতে সিলিকন, সালফেট বা সালফার আছে কিনা কারণ এই উপাদান গুলো চুলের জন্য বেশ ক্ষতিকর।
হেয়ার মাস্ক লাগান
১৫ দিন পর পর ঘরোয়া উপায়ে বাড়িতে স্পা করুন। এতে করে ঝলমলে ও স্বাস্থ্যকর থাকবে চুল। কালার করা চুলের সৌন্দর্য ও নমনীয়তা বজায় রাখতে সপ্তাহে অন্তত দুবার হেয়ার মাস্ক লাগান। এর ফলে চুল প্রয়োজনীয় পরিমাণ ময়েশ্চার পাবে এবং চুল ফাটা বা রুক্ষতা দূর হয়ে চুল সুন্দর থাকবে।
ইত্তেফাক/এফএস