চলছে শারদীয় দুর্গোৎসব। পূজার আনন্দে নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেরাও এখন অনেক বেশি সচেতন। পূজার একেকটা দিন যেনো একেকটি রঙের। তাই সাজপোশাকে অন্যদের থেকে সুন্দর ও প্রাণবন্ত দেখাতে ছেলেদের থাকা চাই বিশেষ প্রস্তুতি। দুর্গাপূজায় ছেলেদের সাজপোশাক কেমন হতে পারে জেনে নিন।
দুর্গাপূজা যেহেতু বাংলার সংস্কৃতির একটি অংশ, তাই সারা বছর পশ্চিমা ধাঁচের পোশাকে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করলেও শারদীয় উৎসবে ঐতিহ্যবাহী পোশাকগুলোকেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া উচিত। বছরের অন্যান্য দিনগুলোতে ধুতি না পরলেও পূজায় ধুতি-পাঞ্জাবির আবেদনটাই অন্যরকম। পূজার দিনগুলোতে ছেলেরা হালকা রঙের পাঞ্জাবি ও পায়ে আরামদায়ক ফিতাযুক্ত স্যান্ডেল পরতে পারেন। কেউ কেউ আবার নিজের স্বাছন্দ্যের জন্য ধুতির বদলে পায়জামা বা জিন্স বেছে নিচ্ছেন। অষ্টমী থেকে নবমীর দিনগুলোতে ইচ্ছে করলে জিন্স-ফতুয়াও পরতে পারেন। অনেকে আবার ট্রাউজারের সঙ্গে খাটো পাঞ্জাবি যেমন পছন্দ করছেন তেমনি বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টি-শার্ট কিংবা হাফ শার্টও রাখছেন পূজার পোশাকের তালিকায়।
অঞ্জলির পোশাকের রঙ সাদা হলেই ভালো। এক্ষেত্রে সাদা রঙের পোশাকের বিকল্প হয়না। তবে কম বয়সীরা লাল, সবুজ, হালকা নীল, গেরুয়া রঙের পোশাকও বাছাই করতে পারেন। আর রাতের জন্য গাঢ় রঙের পোশাক নির্বাচন করাই ভালো। লাল, সবুজ, চকলেট, মেরুন ইত্যাদি রঙের পোশাক রাখতে পারেন নিজস্ব পছন্দের তালিকাতে।
ছেলেরা দিনের বেশিরভাগ সময় বাইরে কাটান। তাই পূজার দিনগুলোতে ঘর থেকে বের হওয়ার আগে হাত-মুখ ধুয়ে সানক্রিম বা লোশন লাগিয়ে নেওয়া উচিত। ব্যাগের মধ্যে একটা ফেসিয়াল বা ফেসওয়াশ রাখা ভালো। শহরের যানজট আর ধুলাবালির মধ্যে অফিসে পৌঁছে প্রথমেই ফেসওয়াশ দিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে নিবেন। চুলের কাটটা আগেই ভেবে রাখুন। চুলের কাটিং-এ বর্তমানে ইমো, লেয়ার, স্টেপ, হোয়াইট ওয়ালস, ফেড, লেয়ার স্পাইক, ক্ল্যাসিক কাট ইত্যাদি চলছে। বয়স, পেশা, মুখের আকৃতি, চুলর ধরণ বুঝে হেয়ার স্টাইল নির্বাচন করুন। পেডিকিউর-মেনিকিউর করতে ভুলবেন না। মনে রাখবেন, পোশাকের পাশাপাশি নিজেকে পরিচ্ছন্ন রাখাটাও বেশ জররি। মণ্ডপে যাওয়ার আগে ছেলেরা ভিন্ন লুক আনতে বাজারে বিভিন্ন স্টাইলের আংটি ও ব্রেসলেট থেকে হাতের জন্য পছন্দমত ও মানানসই বেছে নিতে পারেন। আর দিনের বেলা রোদের কারণে এবং ধুলাবালি থেকে বাঁচতে অবশ্যই সানগ্লাস ব্যবহার করবেন।
অষ্টমী পূজার দিনটি সবার জন্যই একটু বেশি জাঁকজমকপূর্ণ হয়। তাই সেদিনের সাজটা হওয়া চাই অন্য দিনগুলো থেকে আলাদা। অনেকেই এ দিনটিতে ধুতি-পাঞ্জাবি পরতে পছন্দ করেন। ধুতি বাঁধার ঝামেলা থেকে মুক্ত রাখতে আজকাল প্যান্ট ধুতি অর্থাৎ সেলাই করা ধুতি পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজে। ধুতির সঙ্গে মিলিয়ে পরতে পারেন রাজকীয় মোটিফের গাঢ় কোনো রঙের পাঞ্জাবি। সঙ্গে রাখতে পারেন উত্তরীয়।
তবে যাদের বয়স বেশি তারা সাদা, চাপা সাদা, ঘিয়ে, বাদামি শেডের রঙের পোশাক বাছাই করতে পারেন। পাঞ্জাবি পরতে পারেন একটু ভারী। যেমন তসর, বলাকা সিল্ক, রাজশাহী সিল্ক, অ্যান্ডি সুতি, অ্যান্ডি সিল্ক কাপড়ের ওপর। দশমীতে অনেকে আত্মীয়ের বাড়ি যান, গুরুজনদের আশীবার্দ নিতে। এ ক্ষেত্রেও আর্দশ পোশাক ধুতি-পাঞ্জাবি কিংবা পায়জামা-পাঞ্জাবি।
ইত্তেফাক/আরএম