শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বরাদ্দ পেলেও মেরামত হয় না বিদ্যালয় ভবন

আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০১৯, ১০:৩১

প্রতি বছর একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প থেকে ক্ষুদ্র অবকাঠামো উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য শিক্ষার্থী অনুপাতে কমবেশি সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়ে থাকে। তদুপরি স্থানীয় সংসদ সদস্যের অনুরোধে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত একেকটি বিদ্যালয়কে দেওয়া হয়। এরপর টেস্ট রিলিফের অর্থও ছোটোখাটো মেরামতকাজের নামে দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরও দেখা যায়, দেশের বেশির ভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকে জরাজীর্ণ, শিক্ষার্থী পাঠদানের অনুপযোগী ভবন। তাহলে এই অর্থ কোথায় যায়, তা নিয়ে এখন বড়ো প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসাইন ইত্তেফাককে বলেন, যথাযথ তদারকি আর বছরের শেষ সময়ে বরাদ্দ দেওয়ার কারণে অনেক ক্ষেত্রে অর্থের ব্যবহার যে ঠিকমতো হয় না সেটি অস্বীকার করার উপায় নেই। তিনি জানান, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি, উপজেলা শিক্ষা অফিসার, জেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি করে অর্থ খরচ করার নিয়ম। আর মন্ত্রণালয় থেকে তদারকির জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় জেলা প্রশাসককে। তিনি নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে তদারক করে থাকেন। ক্ষেত্রবিশেষে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও তদারক করে থাকেন।

সচিব বলেন, অর্থের যথাযথ ব্যবহারে এবার এপ্রিলেই বরাদ্দ দেওয়া হবে। পরিমাণও বাড়ানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে সময়মতো কাজ শেষ করার সুযোগ দিয়ে তদারকি ব্যবস্থায়ও পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

জানা যায়, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সংস্কার বা উন্নয়নের জন্য সরকার আটটি খাতে প্রাথমিক বিদ্যালয়কে শিক্ষার্থী অনুপাতে বরাদ্দ দিয়ে থাকে। খাতগুলো হচ্ছে :বিদ্যালয়ের রুটিন মেরামতের জন্য বছরে ৪০ হাজার টাকা, শ্রেণিকক্ষ সজ্জিত করার জন্য ১০ হাজার টাকা, ওয়াশব্লক পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য ২০ হাজার টাকা, মেরামতের জন্য দেড় থেকে ২ লাখ টাকা, বই বিতরণে ৪০০ টাকা, বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানের জন্য ২ হাজার টাকা, জাতীয় শোক দিবস পালন অনুষ্ঠানে ২ হাজার টাকা, বিবিধ খাতে ৮ হাজার টাকা, পিইডিপি-৪ থেকে ৫০ ও ৭০ হাজার টাকা, রাজস্ব খাত থেকে দেড় লাখ টাকা এবং ক্ষুদ্র মেরামতকাজের জন্য প্রতি বছর ২ লাখ টাকা। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, প্রতি বছরই যেখানে সংরক্ষণ ও মেরামতকাজের জন্য এত টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়, সেখানে কেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনেকগুলো বছরের পর বছর ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।

বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, দুর্বল তদারকি আর সেই সুযোগে পরিচালনা পরিষদ, স্কুলপ্রধান এবং স্থানীয় প্রশাসনের যোগসাজশে প্রকৃতপক্ষে এসব টাকার উল্লেখযোগ্য অংশই ব্যবহূত হয় না। এক্ষেত্রে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টরা এসব বরাদ্দ পকেটস্থ করছেন কি না, সে বিষয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন অনেকেই