বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয় লেখাপড়ার জন্য লাশ হওয়ার জন্য নয়: রাষ্ট্রপতি

আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৮:৫০

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ঘটে যাওয়া অমানবিক ও অনভিপ্রেত ঘটনার দায় কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীরা লেখাপড়া করে জ্ঞান অর্জনের জন্য ভর্তি হয়, লাশ হয়ে বা বহিষ্কৃত হয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য নয়।

সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য আবদুল হামিদ এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ৫২তম এই সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্যকালীন কোর্সের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এখন দিনে সরকারি আর রাতে বেসরকারি চরিত্র ধারণ করে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলো সন্ধ্যায় মেলায় পরিণত হয়। এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়।

রাষ্ট্রপতি বলেন, সন্ধ্যার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবেশ থাকে না। একটা সাবজেক্ট আছে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস- ২২টা কোর্স। প্রতি কোর্সে সাড়ে ১০ হাজার টাকা। এতে দুই লাখ ৩০ হাজার না কত যেন হয়। শুনছি এর অর্ধেক শিক্ষকরা পায় আর বাকি অর্ধেক ডিপার্টমেন্ট। ডিপার্টমেন্টের টাকা কি হয় জানি না। যারা সিনিয়র টিচার শুধু তারাই ক্লাস নেয়।

আরো পড়ুন: অক্ষয় কুমারকে ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হচ্ছে

তিনি আরো বলেন, নিয়মিত কোর্স ছাড়াও এসব বাণিজ্যিক কোর্সের মাধ্যমে প্রতিবছর হাজার হাজার গ্র্যাজুয়েট বের হচ্ছে। এসব ডিগ্রি অর্জন করে শিক্ষার্থীরা কতটুকু লাভবান হচ্ছেন? এ ব্যাপারে প্রশ্ন থাকলেও একশ্রেণির শিক্ষক ঠিকই লাভবান হচ্ছে। তারা নিয়মিত নগদ সুবিধা পাচ্ছেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশের পাশাপাশি সার্বিক পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সমালোচনা করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জনগণের টাকায় চলে, এর জবাবদিহিও জনগণের কাছে। জনগণের এই অর্থে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তের যেমন ভাগ আছে, তেমনি ভাগ আছে কৃষক-শ্রমিক মেহনতি মানুষের। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটা পয়সা সততার সঙ্গে ব্যবহার নিশ্চিত করার দায়িত্ব উপাচার্য ও শিক্ষকদের।

পদ-পদবী পেয়ে শিক্ষকরা নিজেদের কাজ ভুলে যাচ্ছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, কোনো কোনো উপাচার্য ও শিক্ষকের কাজ দেখলে মনে হয় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আসল কাজ কি তা ভুলে গেছেন।

ইত্তেফাক/জেডএইচ