বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

‘উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবেও সম্মান অর্জন করেছে বাংলাদেশ’

আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০২০, ১৪:১৫

'বিশ্বে এখন বাংলাদেশ শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলাতেই রোল মডেল নয়, উন্নয়নেরও রোল মডেল হিসেবে আলাদা একটা সম্মান অর্জন করেছে বাংলাদেশ', বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে নিজ ফেসবুক ওয়ালে এ বিষয়ে একটি স্ট্যাটাস পোস্ট করেন তিনি। একই সঙ্গে ওই পোস্টে দুর্যোগ মোকাবেলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন উন্নয়নকাণ্ডও তুলে ধরেন তিনি।   

স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, 'দুর্যোগ মোকাবেলায় পথিকৃৎ ছিলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭০ সালের ভয়াল ঘূর্ণিঝড়ে মৃত্যু হয় প্রায় ১০ লাখ মানুষের। এতবড় মানবিক বিপর্যয়ের পরও তৎকালীন পাকিস্তান সরকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য সাহায্য-সহযোগিতার হাত বাড়ায়নি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সে সময় দুর্গত এলাকায় উদ্ধার এবং ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছিলেন। সেই তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির পিতা, বন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে সাইক্লোন প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) প্রস্তুত করেছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘূর্ণিঝড় থেকে জনগণের জানমাল রক্ষায় ১৭২টি সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ করেন। স্থানীয় লোকজন এর নাম দিয়েছিলে মুজিব কেল্লা।'

তিনি আরও লেখেন,  তারই সুযোগ্য কন্যা,মানবতার জননী,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনার বঙ্গবন্ধু কন্যা, মানবতার জননী, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ইতোমধ্যে ৩৭৮টি মুজিব কেল্লা নির্মাণ করেছে। আর উপকূলে ৩ হাজার ৮৬৮টি বহুমুখী সাইক্লোন শেল্টার সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছে এবং আরও ১ হাজার ৬৫০টি সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করবার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। নেতৃত্বে বিশ্বে এখন বাংলাদেশ শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলাতেই রোল মডেল নয়,উন্নয়নের-ও রোল মডেল হিসেবে আলাদা একটা সম্মান অর্জন করেছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দুর্যোগপ্রবণ দেশ। শুধু প্রাকৃতিক নয়, মানবসৃষ্ট দুর্যোগে বাংলাদেশ সামনের সারিতে অবস্থান করছে। তা সত্ত্বেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দুর্যোগ মোকাবেলায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে।বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সক্ষমতা পূর্বের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে উপকূলীয় দুর্যোগে প্রাণ ও সম্পদের ক্ষতি কমিয়ে আনতে সরকার বিশেষ সাফল্য পেয়েছে।

দুর্যোগ মোকাবেলায় বর্তমানে প্রায় ৫৬ হাজার প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে আমাদের। তাছাড়া ৩২ হাজার নগর স্বেচ্ছাসেবক, ২৪ লাখ আনসার ভিডিপি, ১৭ লাখ স্কাউটস, ৪ লাখ বিএনসিসি, গার্লস গাইডের প্রায় ৪ লাখ সদস্য- তারাও এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। যেকোন দুর্যোগের সময় তারাও জীবনের ঝুঁকি উপেক্ষা করে ঝাঁপিয়ে পড়ে মানবতার কল্যাণে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় বিচক্ষণ নেতৃত্বের স্বীকৃতি হিসেবে জাতিসংঘ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে 'চ্যাম্পিয়ন্স অব দি আর্থ' পুরস্কারে ভূষিত করেছে।'

এ সময় ব্যাংককে চলমান দুর্যোগ ও বিপর্যয় মোকাবিলার বিষয়ে আঞ্চলিক পরামর্শমূলক কমিটির (আরসিসি) পঞ্চদশ সম্মেলনের বিষয়ে তিনি লেখেন, 'থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের দ্য অ্যাথিনি হোটেলের গ্র্যান্ড হলে দুর্যোগ ও বিপর্যয় মোকাবিলার বিষয়ে আঞ্চলিক পরামর্শমূলক কমিটির (আরসিসি) পঞ্চদশ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলকে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে যখন এই কথাগুলো বলেছি তখন সকলেই মুহুর্মুহু করতালি দিয়ে প্রশংসিত করেছেন দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে।

ধন্যবাদ মানবতার জননী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে। আপনার কৃত পদক্ষেপের কারণে বিশ্ব আজ আমাদের এভাবে সম্মানিত করে।

দুর্যোগ মোকাবেলায় আঞ্চলিক সহযোগিতা, স্থিতিশীলতা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সংহতি কে আরও সম্প্রসারণ ও জোরদার করার লক্ষ্যে বহুজাতিক এ সম্মেলনে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ২০ টি দেশের দুর্যোগ পরিচালনার বিষয়ে সরকারী সংস্থাগুলির প্রতিনিধি ছাড়াও অংশ নিচ্ছেন ৪০ টিরও বেশি সংস্থার প্রতিনিধিরা।

ব্যাংকক ঘোষণার মধ্য দিয়ে পরিসমাপ্তি ঘটবে এই আসরের।'

ইত্তেফাক/জেডএইচডি