বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

সংকটে পর্যটন খাত

আপডেট : ০৪ জুন ২০২০, ০২:১৩

করোনায় বৈশ্বিক মহামারিতে বাংলাদেশের ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস খাত ভয়াবহ সংকটে পড়েছে। আপাতদৃষ্টিতে পরিস্থিতির উন্নতির কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না এ খাতের সঙ্গে সম্পৃক্তরা। এখন পর্যন্ত শুধু ট্যুরিজম সেক্টরে ৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন। এখন বন্ধ অফিসের ভাড়া পরিশোধের সামর্থ্য নেই অনেক প্রতিষ্ঠানের, কর্মচারীদের বেতন-ভাতা তো দূরের কথা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশে ট্রেড ও অ্যাভিয়েশন নিবন্ধনধারী ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস এজেন্সির সংখ্যা সাড়ে তিন হাজারের মতো। এ খাতে কর্মরত জনবলের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। দেশের প্রতিষ্ঠিত ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, এই ৫০ হাজার কর্মীর জীবন ও জীবিকা ইতিমধ্যে ঝুঁকিতে পড়েছে।

ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস কোম্পানিগুলো সাধারণত ট্যুরিস্ট ভিসা, বিজনেস ভিসা, মেডিক্যাল ভিসা, হজ ও ওমরাহ ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেস এবং ট্যুর প্যাকেজ, ট্যুর কনসালট্যান্সি ও এয়ার টিকিটিংয়ের কাজ করে থাকে। ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোর পাশাপাশি চীন, রাশিয়া, জাপান, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, নেপাল, ভুটান, থাইল্যান্ডের মতো দেশগুলোতে প্রতি মাসে হাজার হাজার বাংলাদেশি নাগরিক ভ্রমণ করে। দিনে দিনে বাড়ছিল ভ্রমণকারীর সংখ্যা। সেই সঙ্গে বাড়ছিল এ খাতের উদ্যোক্তার সংখ্যা এবং বিনিয়োগও। গত দুই দশকে এই খাতে নতুন করে অন্তত ২ হাজার উদ্যোক্তা তাদের পুঁজি বিনিয়োগ করেছেন। ফলে ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস খাতে তৈরি হয়েছে নতুন কর্মসংস্থান। শুধু বাংলাদেশিদের বিদেশ ভ্রমণের জন্য ভিসা প্রসেস নয়, বিদেশি পর্যটকদের বাংলাদেশ ভ্রমণের ব্যাপারেও এ কোম্পানি ও এজেন্সিগুলো কাজ করে।

কিন্তু গত জানুয়ারিতে হঠাত্ বদলে যায় দৃশ্যপট। চীনে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ইতিমধ্যে সাড়ে তিন লাখের বেশি লোক মারা গেছে। বিশ্বের অধিকাংশ দেশ সীমান্ত বন্ধ রেখেছে। এতে গোটা বিশ্বেই পর্যটকদের ভ্রমণ বন্ধ হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে পর্যটনের শতভাগ বুকিং বাতিল হয়ে গেছে। নতুন কোনো বুকিংও নেই।

লেক্সাস ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অজিত সাহা ইত্তেফাককে বলেন, ‘করোনার কারণে আমাদের পুরো ব্যবসাই বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে এই সেক্টরের সব কর্মী বেকার হয়ে যাবেন।’ অন্যদিকে, ট্যুরস অপারেটিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)-এর প্রেসিডেন্ট রাফেউজ্জামান বলেছেন, করোনা ভাইরাসের কারণে এ খাত প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছে।

ইত্তেফাক/এসআই