শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নতুন ক্লাস, নতুন বই

আপডেট : ০২ জানুয়ারি ২০১৯, ০২:১৮

শীতের ভোর। কুয়াশায় ঢাকা না থাকলেও শীতের কমতি ছিল না। মনে ছিল আনন্দ-উচ্ছ্বাস। নতুন ক্লাসে ওঠা শিক্ষার্থীরা খালি হাতে স্কুলে এসে ব্যাগ ভর্তি নতুন বই নিয়ে বাড়ি ফিরল। আর এতেই বছরের সেরা আনন্দ খুঁজে পেয়েছে শিক্ষার্থীরা।

গতকাল ছিল নতুন বছরের প্রথম দিন। ঘড়ির কাটায় সময় মিলিয়ে শিক্ষার্থীরা হাজির হয় স্কুলে। কোথাও ক্লাসরুমেই শিক্ষার্থীদের বই দেয়া হয়। কোথাও কোথাও স্কুলের মাঠে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হাতে নতুন বই তুলে দেয়া হয়। এ কারণে স্কুলে স্কুলে ছিল উত্সবের আমেজ। আনন্দের জোয়ারে ভেসে ওঠে ছোটদের ক্যাস্পাস।

মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষার্থী ছাড়া প্রাথমিক স্তুরের বেশিরভাগ শিশুই প্রথম দিনে উপস্থিত হয় বাবা-মায়ের সাথে। বই পাওয়ার পরই কেই কেউ বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেয়। গতকাল প্রথম দিনে ক্লাস হয়নি। কোন কোন স্কুলে আজ বই বিতরণ করা হবে।

গতকাল আজিমপুর সরকারি বালিকা স্কুলের মাঠে নতুন বই পাওয়া শিশু শিক্ষার্থী নাহার বলে, ‘খুব ভালো লাগছে। নতুন বই। কি সুন্দর ঘ্রাণ। আজই সব বই পড়বো।’ নাহারের সাথে আসা তা মা জানায়, ‘ও গতকাল থেকেই অস্থির ছিল কখন এখানে বই নিতে আসবে। উচ্ছ্বাসের কারণে রাতেও ঠিকমতো ঘুমায়নি।’

কেন্দ ীয়ভাবে শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় পৃথকভাবে বই বিতরণের মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় আজিমপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। আর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বই বিতরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ ীয় খেলার মাঠে। এছাড়া উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়েও বই বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে। আগামী দিনের বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে সময়োপযোগী আধুনিক ও উন্নত শিক্ষা নিশ্চিত করাই হবে সরকারের কাজ। মন্ত্রী শিক্ষার্থীদের মাঝে গিয়ে বেলুন উড়িয়ে দেন। শিক্ষার্থীরাও উত্সাহ নিয়ে বই উঁচু করে নাড়াতে থাকে।

উদ্বোধন শেষে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আজ আমাদের জন্য আনন্দের দিন। ইতিহাস সৃষ্টিকারী দিন। বিনামূল্যে এত বই বিতরণের এমন উদাহরণ পৃথিবীর কোথাও নেই। আমরাই সফল হয়েছি। তিনি আরও বলেন, প্রতিবছর জানুয়ারির ১ তারিখে সারাদেশের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেই আমরা। ২০১০ সালের পর একবারও এর ব্যত্যয় ঘটেনি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত হতে পারেননি। সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও আনিসুল হক, জাতীয় দলের ক্রিকেটার ও বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।

সাকিব আল হাসান বলেন, আমি আশা করি, তোমরা সকলে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করবে, সাথে সাথে খেলাধুলাটাও করতে হবে তোমাদের । দুটো জিনিসই এক সাথে চালাতে হবে। তোমরা দেশের ভবিষ্যত্, তাই তোমাদের হাতে বই তুলে দেওয়াটা সব থেকে বড় কাজ।

ইত্তেফাক/নূহু