করোনা সংকটের মধ্যে বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা করার পরও ভিয়েতনাম থেকে ফেরেননি ২৭ বাংলাদেশি। আজ সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভিয়েতনামে বাংলাদেশ মিশন থেকে জানানো হয়েছে, ২৭ বাংলাদেশি মানব পাচারের শিকার হয়ে এখন হ্যানয়ের একটি হোটেলে অবস্থান করছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ভিয়েতনামে বিদেশি কর্মীদের কাজের খুব বেশি সুযোগ নেই। তবে মানবপাচারের শিকার এসব বাংলাদেশি ভিয়েতনাম হয়ে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড বা এশিয়ার অন্য কোনো উন্নত দেশে যেতে চেয়েছিলেন। ভিয়েতনামে তারা আটকা পড়ার পর দেশে ফিরিয়ে আনতে গত ২ জুলাই একটি বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হয়। এই ফ্লাইটে ১১ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরে আসেন। ২৭ বাংলাদেশিও ফেরার তালিকায় ছিলেন। তবে তারা ঘোষণা দেন, তাদের প্লেন ভাড়া বাংলাদেশ সরকারকে বহন করতে হবে। কোনো অবৈধ কর্মীকে দেশে ফেরত আনার জন্য পেন ভাড়া বহনে বাংলাদেশ সরকারের কোনো সুযোগ নেই। বিদেশে আটকা পড়া বাংলাদেশিদের পেন ভাড়া তাদেরই বহন করতে হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কর্মীদের পেন ভাড়া নিজ নিজ কোম্পানি বহন করে। তবে ভিয়েতনামে আটকা পড়া বাংলাদেশিদের কাজের ভিসা নেই। তারা সেখানে গিয়েছেন পর্যটক হিসেবে।
আরো পড়ুনঃ রোমে নতুন করে আরো ৫ বাংলাদেশি করোনায় আক্রান্ত
২ জুলাই বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় আসার পরদিন তারা ভিয়েতনামের বাংলাদেশ মিশনে জোর করে প্রবেশের চেষ্টা করে, যেটা আন্তর্জাতিক ও ভিয়েতনামের স্থানীয় আইনের লঙ্ঘন। প্রথমত, তারা দেশে ফিরতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। দ্বিতীয়ত, তাদের কিছু বলার থাকলে সুশৃঙ্খলভাবে বলতে পারতেন। তারা সেটা না করে দূতাবাসে জোরপূর্বক প্রবেশের চেষ্টার মাধ্যমে বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছেন। এখন তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হুমকি দিচ্ছেন, তাদের দাবি না মানলে বিদেশের সব বাংলাদেশ মিশনে বিশৃঙ্খলা ঘটানো হবে।
তারা সামাজিক মাধ্যমে লাইভে এসে দেশের বিরুদ্ধে অসম্মানজনক বক্তব্য দিচ্ছেন। কোনো বন্ধু দেশে আটকা পড়া নাগরিকদের এমন কর্মকাণ্ড অগ্রহণযোগ্য। বাংলাদেশ সম্প্রতি যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের মানবপাচার প্রতিবেদনে এক ধাপ অগ্রগতি লাভ করেছে, সেখানে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভিয়েতনামে মানব পাচারকারীদের শনাক্তে বাংলাদেশ সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে।
এদিকে করোনা ভাইরাসের কারণে ঢাকা- হ্যানয় পেন চলাচলে আরো সময় লাগবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ইত্তেফাক/কেকে/এমএএম