বাংলাদেশের আধুনিক চিত্রকলার অন্যতম পথিকৃৎ চিত্রশিল্পী ও ভাষাসংগ্রামী মুর্তজা বশীর আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। করোনা আক্রান্ত এ শিল্পী রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (১৫ আগস্ট) সকাল ৯টা ১০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। হাসপাতাল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আর আগে শিল্পী মুর্তজা বশীরের বড় মেয়ে মুনীরা বশীর জানান, বাবা হৃদরোগ, ফুসফুস ও কিডনি জটিলতায় ভুগছেন। বৃহস্পতিবার রাত তিনটার দিকে বাবাকে এমআইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে। তিনি সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
শুক্রবার তার করোনা পরীক্ষা করা হলে ফলাফল পজিটিভ আসে। শুক্রবার থেকে তার পালস পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে শনিবার সকাল ৯টা ১০ মিনিটে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বহু ভাষাবিদ ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর ছোট ছেলে মুর্তজা বশীর ১৯৩২ সালের ১৭ আগস্ট ঢাকার রমনায় জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা ও ফ্লোরেন্সে শিল্পশিক্ষা গ্রহণ করে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ছিলেন। বাংলাদেশে ‘বিমূর্ত বাস্তবতা’ চিত্রধারণার প্রবর্তক শিল্পী মুর্তজা বশীরের ‘দেয়াল’, ‘শহীদ শিরোনাম’, ‘পাখা’ শীর্ষক বিখ্যাত কয়েকটি চিত্রমালা রয়েছে।
ফিগারেটিভ চিত্রকলায় স্বতন্ত্র ভাষা তৈরি করলেও ‘জ্যোতি’ ও ‘কালেমা তাইয়্যেবা’ শীর্ষক গুরুত্বপূর্ণ চিত্রমালা তিনি এঁকেছেন। লিনোকাট মাধ্যমে ‘রক্তাক্ত ২১শে’ শীর্ষক তাঁর আঁকা ছবিটি ভাষা আন্দোলন বিষয়ক প্রথম চিত্রকর্ম বলে গণ্য করা হয়। ১৯৭৯ সালে প্রকাশিত হয়েছে তার লেখা বিখ্যাত উপন্যাস ‘আলট্রামেরিন’। টেরাকোটা, মুদ্রা ও শিলালিপি নিয়েও তিনি গবেষণা করেছেন।
বাংলাদেশের চিত্রকলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় ১৯৮০ সালে তিনি পান একুশে পদক। ২০১৯ সালে শিল্পী মুর্তজা বশীরকে স্বাধীনতা পদক প্রদান করা হয়।
ইত্তেফাক/এমআর