শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

অবশেষে বন্ধ কক্সবাজারের পর্যটন

আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০২১, ০২:২২

অবশেষে বন্ধ ঘোষণা করা হলো কক্সবাজারের পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র। আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত কক্সবাজার জেলার সকল পর্যটন স্পট ও বিনোদন কেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ। বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) রাত ৮টা ৪০ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের নামে (ডিসি কক্সবাজার) ভেরিফাইড একাউন্টে এ ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক।

ইতিমধ্যে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সেন্টমার্টিনে পর্যটনবাহি জাহাজগুলো। গুটিয়ে ফেলা হয়েছে সৈকতের বালিয়াড়িতে পর্যটকদের বসার জন্য সাজানো কিটকট চেয়ার। করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারের ১৮ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে কক্সবাজার শহরে গণজমায়েত রদ, যানবাহনে অতিরিক্ত যাত্রিবহন রোধসহ সৈকত ও হোটেল-মোটেল জোন এবং পর্যটনস্পট গুলোতে কার্যক্রম অব্যহত রেখেছে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ। মাঠে নেমেছে পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে জেলা পুলিশও। এমনটি জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাহিদ আহসান।  

কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান জানান, গত এক মাসে সারাদেশের মত কক্সবাজারেও করোনা আক্তান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এটা ক্রম উর্ধমুখী। পরিসংখ্যান মতে গত ১ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত মোট ১৩ হাজার ৭৭ জন পরীক্ষার আওতায় এসেছেন (গড়ে ৪২২জন)। এর মাঝে পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে ৫১৯ জনের। কক্সবাজারে করোনা পরিস্থিতি কঠিনের দিকে যাচ্ছে। এ মূহুর্তে সকলের সচেতন হওয়া খুবই জরুরী।

করোনার ঠিকাদান বিষয়ে সিভিল সার্জন বলেন, কক্সবাজারে করোনার টিকা এসেছে ৮৭ হাজার ২২৮টি, প্রয়োগ করা হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার জনকে। ৯ কেন্দ্রে ২৬টি বুথে এ টিকা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

সৈকতে গোসলকালীন ভেসে যাওয়া বিপদাপন্ন পর্যটক সেবায় থাকা সী সেইফ লাইফ গার্ডের সুপারভাইজার মোহাম্মদ ওসমান বলেন, শুক্র-শনিবার ছুটির দিন ছাড়াও প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক ও স্থানীয় ভ্রমণপিপাসু কক্সবাজার সৈকতে আসেন। করোনা কালে সতর্কতার জন্য মাস্ক পরার কথা থাকলেও হাতেগোনো কয়েকজন ছাড়া সিংহভাগই মাস্কহীন।
 
এদিকে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া সুলতানা, সৈয়দ মুরাদ হোসেনসহ বেশ কয়েকজন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার পাশাপাশি মাইকে প্রচারণাও চালাচ্ছেন। মাস্ক সরবরাহ করে সচেতনতার পাশাপাশি জরিমানাও করছেন তারা।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেন, সচেতনতার বিষয়ে উদাসীনতার কারণে কক্সবাজারে করোনার প্রাদূর্ভাব বাড়ছে। যানবাহন চালক, যাত্রী ও পথচারীদের মাস্ক পরিধান নিশ্চিত এবং জনসমাগম সীমিত করতে জেলা প্রশাসনের মতো পুলিশও মাঠে কাজ করছে। 

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, সরকারের জারি করা ১৮ নির্দেশনা মতো সৈকতে পর্যটক সমাগম সীমিত করতে গত কয়েকদিন কাজ করেছি। সৈকতে জনসমাগম অতিরিক্ত হতে দেয়া হচ্ছিল না। কাজ করছিল একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত। এরপরও ঠেকানো যাচ্ছিল না করোনার প্রাদূর্ভাব। ফলে, পর্যটন শিল্পের স্টেকহোল্ডার ও সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনা করে আপাত ১৪ দিনের জন্য কক্সবাজারের পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হলো। করোনা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন ডিসি।

ইত্তেফাক/এসজেড